চুলের রূক্ষতা দূর করতে ৭টি প্রোটিন রিচ হেয়ার মাস্ক
আমাদের চুলের তিনটি স্তর, চুলের উপরিভাগের স্তর খুবই গুরুত্বপূর্ন, বিভিন্ন দূষন থেকে চুলকে সুরক্ষা দিতে এটি কার্যকর। চুলের কিউটিকল এরিয়া ধ্বংস হয়ে গেলে চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা ছাড়াও চুল বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চুলের উপরিভাগের স্তর নষ্ট হলে চুলের ইলাসট্রিসিটি লেভেলও নষ্ট হয়ে যায়।
চুল ড্যামেজ হওয়ার বিভিন্ন কারন আছে তার মধ্যে কমন কিছু কারন হলোঃ
- কেমিক্যাল প্রোডাক্ট ব্যবহার করা
- অতিরিক্ত ষ্টাইল মেশিনের ব্যবহার
- চুলে ময়েশ্চারাইজার এর অভাব
- গরম আবহাওয়া
- স্ট্রেস
- বালিশের সমস্যা
- প্রাকৃতিক কারনসমূহ
- ক্লোরিনযুক্ত পানি।
বিভিন্ন কারনে চুল ড্যামেজ হয়ে থাকলে, এবার এই প্রোটিন রিচ হেয়ার মাস্কগুলো থেকে বেছে নিন আপনার যেটা সুবিধা হয়ঃ
১. অলিভ অয়েল-
চুলের ড্যামেজ ঠিক করতে অলিভ অয়েল অনেক কার্যকর তেল। এর প্রধান কেমিক্যাল উপাদানগুলো যেমন অলিক এসিড, পালমিটিক এসিড, এবং স্কুয়ালেন আপনার চুলকে সফট এবং চুলকে শক্ত করবে। প্রয়োজন মতো অলিভ অয়েল একটু গরম করে নিন এর সাথে দুই চামচ মেথি যোগ করুন। কিছু সময় পর তেল ঠান্ডা হয়ে এলে, আপনার মাথায় লাগিয়ে নিয়ে, একটি তোয়ালে দিয়ে ১০ মিনিট চুল ঢেকে রাখুন। মাইল্ড কোন শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ৩বার এভাবে চুলের যত্ন নিন, কিছুদিন পর পার্থক্যটা নিজেই অনুভব করবেন।
২. নারিকেল তেল-
নারিকেল তেলে চুলের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং প্রোটিন আছে পর্যাপ্ত পরিমানে। প্রয়োজন মতো নারিকেল তেল গরম করে নিন, এর সাথে মধু নিয়ে মিক্স করে নিন ভালো মতো, এবার চুলে লাগিয়ে রাখুন কিছুটা সময়। ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। ভালো ফল পেতে সপ্তাহে ৩-৪ বার এই মাস্কটি লাগান।
৩. এভোকাডো-
এভাকাডোতে ডিমের সমপরিমান ভিটামিন এবং প্রোটিন আছে তাই শুস্ক চুলের যত্নে এভাকাডো বেশ কার্যকর। একটি এভাকাডো নিন এবং পেষ্ট তৈরি করে নিন।এই পেস্টটি চুলে লাগান, একটা টাওয়েল দিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন এবং অপেক্ষা করুন ৩০ মিনিট, তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই মাস্কটি সপ্তাহে ৩-৪ বার লাগান।
৪.কলা-
শুস্ক, রুক্ষ চুলের পুষ্টি যোগাতে কলা দারুন একটি সুপার ফুড। একটি পাকা কলা নিন এবং খোসা ছাড়িয়ে ভালো মতো পেষ্ট তৈরি করে নিন। এর সাথে ১ চামচ নারিকেল তেল এবং এক চামচ অলিভ অয়েল যোগ করুন। এক সাথে সব ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে মাথায় লাগান এবং ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। সপ্তাহে কমপক্ষে ২ বার এই মাস্কটি চুলে লাগান।
৫. জবা ফুল-
শুধুমাত্র জবা ফুলই নয় এর পাতাও চুলের শুস্কতা রোধে ভালো কন্ডিশনারের কাজ করে।১০-১২টি জবা ফুলের পাতা নিন এবং ভালো মতো পেষ্ট তৈরি করে নিন এর সাথে কিছুটা নারিকেল তেল এবং অলিভ অয়েল যোগ করুন। এরপর টকদই নিয়ে ভালো মতো মিশিয়ে নিন। এই পেষ্টটি মাথায় লাগিয়ে অপেক্ষা করুন কিছুটা সময়। তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এই মাস্কটি সপ্তাহে ২-৩ বার লাগান।
৬. অ্যালোভেরা-
অনেক বেশী ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই সমৃদ্ধ এলোভেরা জেল চুলের প্রোটিন রিচ হেয়ার মাস্ক গুলোর মধ্যে বেষ্ট। নিয়মিত এলোভেরা জেল চুলে ব্যবহার করলে আপনার চুলে প্রয়োজনীয় ময়েশ্চারাইজার যেমন যোগান দিবে তেমনি স্ক্যাল্প এর পিএইচ ভ্যালুও ঠিক থাকবে। চাইলে বাসার টবে লাগানো তাজা এলোভেরা নিয়ে তার জেল বের করে নিন অথবা বাজারে রেডিমেড যে এলোভেরা জেল পাওয়া যায় সেটা নিয়ে মাথায় লাগিয়ে নিন, চুল শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। আপনার চুলকে বাউন্সি এবং শাইনি করতে চাইলে এই জেল এর সাথে মধু অথবা লেবুর রসও যোগ করতে পারেন।
৭. ডিম-
ডিমে আছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল এবং প্রোটিন যা চুলের শুস্কতা এবং রুক্ষতা দূর করতে সহায়তা করে। একটি ডিম আপনার চুলে যেমন ভলিউম আনবে তেমনি চুলে প্রয়োজনীয় পুষ্টিও যোগাবে। একটি ডিম এর সাথে কিছুটা অলিভ অয়েল নিন। ভালো মতো মিশিয়ে নিয়ে চুলে লাগান। চুল শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। ডিমের গন্ধ অনেকে সহ্য করতে পারেন না, সেক্ষেত্রে এর সাথে কিছুটা লেবুর রস অথবা গোলাপ জল মিশিয়ে নিতে পারেন।
ছবিঃ সংগৃহীত