বিদায় ব্ল্যাক হেডস
রোদ-বৃষ্টির খেলায় চেহারার দশা বেহাল হওয়াটাই স্বাভাবিক। এই আবহাওয়ায় ত্বকের উজ্জ্বলতাও অনেকখানি কমে যায়। পাশাপাশি যে সমস্যাটা দেখা দেয় তা হলো ব্ল্যাক হেডস কিংবা হোয়াইট হেডস। আপনার ত্বকের সৌন্দর্য অনেকখানিই কমিয়ে দিতে পারে ছোট্ট এই বিষয়টি।
কেন এই সমস্যা?
আমাদের সবার ত্বকেই কম-বেশি এই সমস্যাটি দেখা যায়। এর কারণ হিসেবে রেড বিউটি পারলার অ্যান্ড স্যালনের রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন বলেন, ‘হোয়াইট হেডস আসলে একধরনের ব্রণ, যার ওপরে কোনো পর্দা থাকে না। বাইরের নানা জীবাণু কিংবা ধুলাবালুর সংস্পর্শে এই ব্রণগুলো কালো হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে যাকে আমরা ব্ল্যাক হেডস বলে থাকি। একধরনের অক্সিডাইজের প্রক্রিয়ায় এমনটি হয়ে থাকে।’ ত্বকের এই সমস্যা সবার ক্ষেত্রেই দেখা দেয়। মূলত কিশোরী থেকে প্রৌঢ়—এ বয়সসীমায় এর প্রকোপ বেশি থাকে। কিশোর বয়সে হরমোনের নানা পরিবর্তন ঘটে। ফলে এ সময়ে স্বাভাবিকভাবে ত্বক অনেকটাই সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। আর তাই দেখা দেয় এই সমস্যা।
কীভাবে দূর করি
হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল ও কলেজের ডারমাটোলজি বিভাগের সাম্মানিক অধ্যাপক ডা. এম ইউ কবির চৌধুরীর মতে, ব্ল্যাক হেডস এবং হোয়াইট হেডসের সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় হলো ত্বক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। তিনি বলেন, ‘এর কোনো বিকল্প নেই। কেননা ত্বকের মৃত কোষ জমে ত্বকের রোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়। আর ধুলাবালু এবং নানা জীবাণু তো আছেই।’ এ ব্যাপারে আফরোজা পারভীন জানান, ‘বাইরে থেকে এসেই মুখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিতে হবে। সঙ্গে যদি আইস কিউব ব্যবহার করা যায় তাহলে আরও ভালো।’
শুরুর দিকে নাক ও গালের ওপরের অংশে এই সমস্যা দেখা দেয়। অনেকেই একে গুরুত্ব দেয় না। ফল হয় হিতে বিপরীত। সম্পূর্ণ মুখেই এই হেডস ছড়িয়ে পড়ে। আবার অনেক ক্ষেত্রে ব্ল্যাক হেডসের দাগ বসে যেতে পারে। শুরু থেকেই এর প্রতিরোধ করা উচিত। নিতে হবে সঠিক উপায়ে যত্ন। কিছু ঘরোয়া প্যাকে উপকার পেতে পারেন।
বিভিন্ন ধরনের প্যাকে
১ চা-চামচ কর্নফ্লাওয়ার, আধা চা-চামচ ভিনেগার, সমান পরিমাণ মধু, সঙ্গে পরিমাণমতো লেবুর রস এবং একটু চিনি মিশিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন মাস্ক। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এটি খুবই উপকারী।
এ ছাড়া ২ চা-চামচ ডিমের সাদা অংশ, চন্দনের গুঁড়োর সঙ্গে একটু লেবুর রস মিশিয়েও প্যাক তৈরি করতে পারেন। সপ্তাহে অন্তত দুদিন এটি ব্যবহার করুন। প্যাক ব্যবহারের সময় নাক ও গালের চারপাশ ভালো করে ম্যাসেজ করে নিন। এটি স্ক্রাবের কাজ করবে।
সপ্তাহে ২ দিন ভালোমতো স্ক্রাব করে নিতে হবে। ঘরোয়া উপায়ে ফেসওয়াশের সঙ্গে চিনি মিশিয়েও স্ক্রাবিং করতে পারেন।
মেকআপ ব্যবহারে সতর্কতা
কবির চৌধুরী বলেন, ‘যতটা সম্ভব অতিরিক্ত মেকআপ ব্যবহার না করাই ভালো। আর প্রসাধনী ব্যবহারের পর ভালোমতো পরিষ্কার করে নিতে হবে।’ বাজারে মেকআপ তোলার বিভিন্ন কিট পাওয়া যায়। আর মুখের জন্য আলাদা তোয়ালে কিংবা রুমাল ব্যবহার করুন।
তেলমুক্ত খাবার
যতটা সম্ভব তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। পরিবর্তে সবজি ও ফল বেশি করে খান। আর প্রতিদিন ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করুন। এর ফলে ত্বকে তেলের পরিমাণ কমে যায়, ফলে হেডসের সমস্যাও অনেকটা কমে আসে।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, নকশা
ছবিঃ সংগৃহীত