চুলের জন্য খাবার
ত্রুটিপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস, ধুলাবালি ও বাতাসে আর্দ্রতা কমে গেলে চুল পড়া বেড়ে যায়। যাচ্ছে। খাদ্যতালিকায় কিছু খাবার অন্তর্ভুক্ত করলে সহজে চুল ফাটা, পাতলা হয়ে যাওয়া বা অতিরিক্ত ঝরে পরা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। লিখেছেন স্কয়ার হাসপাতালের পুষ্টিবিদ সুমাইয়া রফিক
চুল ‘ক্যারোটিন’ নামক প্রোটিন দ্বারা গঠিত, তাই চুলের যত্ন নিতে আমাদের খাদ্যতালিকায় সঠিক পরিমাণে প্রোটিনযুক্ত খাবার রাখতে হবে। এ ছাড়া চুলের মান বজায় রাখতে ভিটামিন, খনিজ লবণ এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সামুদ্রিক মাছ-
উচ্চ মাত্রায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডযুক্ত মাছ ত্বক ও চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। আমাদের চুল প্রায় ৩ শতাংশ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের তৈরি। সামুদ্রিক মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের উত্তম উৎস। চুলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বজায় রাখতে খাদ্য তালিকায় সামুদ্রিক মাছ যেমন—স্যামন, মেকারেল, সারডিন ইত্যাদি রাখা বাঞ্ছনীয়।
ক্যাপসিকাম-
ক্যাপসিকামে কমলার চেয়ে বেশি ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে, যা কিনা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এ ছাড়া ভিটামিন ‘সি’ চুলের কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে, চুলের গোড়া মজবুত করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ক্যাপসিকাম ও অন্যান্য বেল পেপার অবশ্যই রাখা উচিত।
পালং শাক-
পালং শাকে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন, যা কিনা শক্তি প্রদান করে এবং অ্যান্টি-এজিং ভূমিকা রাখে। চুল ঝরে পড়া বা অকালে পেকে যাওয়া থেকে চুলকে রক্ষা করতে পালং শাক ও অন্যান্য গাঢ় শাকসবজি অত্যাবশ্যকীয়।
নারিকেল-
নারিকেল ভালো ফ্যাট, পটাসিয়াম ও ভিটামিন ‘ই’ এর উৎস। তাই নারিকেল তেল চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। রান্নায় দৈনিক অল্প নারিকেল তেল বা নারিকেল ব্যবহার করলে চুল হয়ে উঠবে মজবুত ও উজ্জ্বল।
অ্যাভোকাডো-
অ্যাভোকাডো সারা বিশ্বে বিখ্যাত হওয়ার প্রধান কারণ হলো ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’, ‘ই’, ‘ডি’ এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড।
সালাদের সঙ্গে এই তেল মিশিয়ে খেলে চুলের গোড়া মজবুত হবে এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
ডিম-
ডিম হলো চুলের সাহায্যকারী। ডিমের সালফার দেহে ভিটামিন ‘বি’ শোষণ, যকৃতের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং চুলের কোলাজেন ও ক্যারোটিন তৈরিতে সাহায্য করে।
রসুন-
রসুনে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক, যা চুল ফাটা প্রতিরোধ করে।
টমেটো-
লন্ডনের দ্য রয়াল সোসাইটি অব মেডিসিনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যেসব নারীকে ১২ মাস ধরে দৈনিক ১০ গ্রাম অলিভ অয়েলের সঙ্গে ৫ টেবিল চামচ টমেটো পেস্ট দেওয়া হয়েছিল তাদের ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্যে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। টমেটোতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট চুলের জন্য উপকারী।
মিষ্টি কুমড়া বীজ-
মিষ্টি কুমড়া বীজে রয়েছে জিংক, ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘কে’ এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। চুলের পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে এসব উপাদান অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
পেয়ারা-
এক বাটি পেয়ারা থেকে আমরা ৩৭৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ পেয়ে থাকি। ভিটামিন ‘সি’ চুল ফাটা প্রতিরোধ করে।
মিষ্টি আলু-
মিষ্টি আলু চুলের চকচকে ভাব বাড়াতে সাহায্য করে। মিষ্টি আলুতে উপস্থিত বিটা ক্যারোটিন দেহে ভিটামিন ‘এ’র অভাব পূরণ করে, যা চুল ও ত্বকের বাইরের কোষের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং বৃদ্ধি ও মেরামতে সহায়তা করে।
দারচিনি-
দারচিনি এন্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ মশলা। এটি দেহে রক্ত চলাচলে সাহায্য করে এবং চুলের গোড়ায় অক্সিজেনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান পৌঁছে দিতে সহায়তা করে।
সূত্র- দৈনিক কালের কন্ঠ
ছবি- সংগৃহীত