সুস্থ চুলের স্ক্যাল্প
সুস্থ ও সুন্দর চুলের জন্য চাই স্ক্যাল্পের পরিপূর্ণ যত্ন। মুখ-ত্বকের মতো সুস্থ চুল পেতে গোড়ার যত্ন তো নিতেই হয়! রইল পরামর্শ...
সুন্দর চুলের জন্য স্ক্যাল্পের পরিচর্চা অনিবার্য। চুলের যত্নে কেবল দৃশ্যমান সমস্যার সমাধানই নয়, অদৃশ্যমান সমস্যার দিকেও নজর দেওয়া উচিত। নইলে চুলের যতই যত্ন নেওয়া হোক না কেন, ফলাফল যেই সেই। তাতে চুল বারংবার হারাবে সুস্থতা এবং কঠিন হয়ে পড়বে সৌন্দর্য।
চুলের যত্ন যে ধরনেরই নিন না কেন, মাথার স্ক্যাল্পের যত্নে আগে স্ক্যাল্পের ধরনটা বুঝে নিন। এ ক্ষেত্রে ভালো বিউটিশিয়ান বা এক্সপার্টের সাহায্য নিতে পারেন। এ নিয়ে শোভন মেকওভার স্কিন স্টুডিও’র এক্সপার্ট বলেন, ‘মুখ ত্বকের মতো মাথার ত্বকেরও রকমফের রয়েছে। যেমন- স্বাভাবিক, শুষ্ক এবং তৈলাক্ত। তাই যত্ন নেওয়ার আগে মাথার স্ক্যাল্পের ধরনটা বুঝে নিন।’
স্বাভাবিক স্ক্যাল্প-
স্বাভাবিক স্ক্যাল্পে সিবাশিয়াস গ্ল্যান্ড কম থাকে। এই স্ক্যাল্প অতিরিক্ত তেল তেলে হয় না। ফলে খুশকি এবং শুষ্কতাও হয়।
তৈলাক্ত স্ক্যাল্প-
এ ধরনের স্ক্যাল্পে খুশকির সমস্যা বেশি হয়। এ ছাড়া অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ এবং ময়লা টানে বলে মাথার ত্বকের লোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায়। ফলাফল, নেতিয়ে পড়া তেল চিটচিটে চুল।
শুষ্ক স্ক্যাল্প-
এ ধরনের স্ক্যাল্পে চুলকানির সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। তবে শুষ্কতাই বেশি বিব্রতকর।
স্ক্যাল্পের সঠিক ধরন বুঝে নিতে পারলে যত্নের কাজও সহজ হয়ে যায়। কীভাবে মাথার স্ক্যাল্পের যত্ন নেবেন সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘প্রয়োজনের তাগিদে রোজ রাস্তায় বেরোতেই হয়। ফলে রাস্তার সস্তা ধুলাবালি অনায়াসেই ঠাঁই করে নেয় মাথার চুল এবং স্ক্যাল্পে। আর এসব সমস্যা থেকে চুলকে রক্ষা করতে মাথা আর স্ক্যাল্প ভালো করে পরিষ্কার করা জরুরি। সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন ভালো করে মাথায় শ্যাম্পু করুন। তবে এক্ষেত্রে মাইল্ড শ্যাম্পু সবচেয়ে বেশি কার্যকর। একটু বেশি কড়া শ্যাম্পু ব্যবহার করলে কিন্তু আপনার চুল আবার বেশি ড্রাই হয়ে যেতে পারে আর চুল পড়াও শুরু হতে পারে। তাছাড়া অন্য শ্যাম্পুও ব্যবহার করতে পারেন যা আপনার চুলের সঙ্গে ভালো স্যুট করে।’
এক্সফোলিয়েশন-
মাথার ত্বকেও প্রচুর মৃতকোষ জমে, যা চুলের বেড়ে ওঠায় বাধা দেয়। ময়লা বাড়ায়। ফলে চুল পড়া দ্রুততর হয়। কমে ঘনত্ব। তাই মাথার ত্বকে নিয়মিত এক্সফোলিয়েশন জরুরি। এ কাজে সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হেয়ার ব্রাশিং। প্রতিদিন চুল আঁচড়ানো স্ক্যাল্পের জন্য ভালো। সপ্তাহে একবার এক্সফোলিয়েটিং শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া স্যালিসাইলিক অ্যাসিডযুক্ত শ্যাম্পুও বেশ ভালো। সমপরিমাণ ব্রাউন সুগার, ওটস আর হেয়ার কন্ডিশনার একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করা যায় চমৎকার স্ক্রাব।
অয়েল ট্রিটমেন্ট
মাথার স্ক্যাল্পের সুস্বাস্থ্যে মাসে অন্তত একবার অয়েল ট্রিটমেন্ট করুন। আর তা পারলার কিংবা বাসা যে কোনো স্থানে দিলেই হলো। অয়েল ট্রিটমেন্ট স্ক্যাল্পের অয়েল গ্রন্থিগুলোকে উজ্জীবিত করে। ফলে মাথার স্ক্যাল্পে রক্ত চলাচল বাড়ে। মাথার ত্বক সুস্থ থাকে। এক্ষেত্রে পাকা অ্যাভোকোডোর সঙ্গে অর্ধেক কাপ নারিকেল তেল এবং এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে মসৃণ পেস্ট তৈরি করে তা মাথার ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন।
ম্যাসাজ
নিয়ম করে স্ক্যাল্প ম্যাসাজ করতে পারেন। এতে ব্লাড সার্কুলেশন বাড়ে। স্ক্যাল্প সুস্থ থাকবে। পুষ্টি পৌঁছে যায় চুলের উেস। গোড়া শক্ত হয়। দূর হয় খুশকি। স্ক্যাল্প ম্যাসাজের বিভিন্ন ধরনের টেকনিক রয়েছে। সার্কুলার মোশনে ধীরে ধীরে ম্যাসাজ মাথার ত্বক সুস্থ রাখার সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি। এভাবে সপ্তাহে তিন দিন নিয়ম করে স্ক্যাল্প ম্যাসাজ জরুরি।
শুধু পরিচর্চাই নয়, খাবারেও পরিবর্তন আনা জরুরি। স্ক্যাল্পের সুস্থতায় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা জরুরি। সেক্ষেত্রে মাংস, ডিম, চিংড়ি, কুমড়ার বিচি, পনির আর সামুদ্রিক মাছ রাখতে পারেন রোজকার মেন্যুতে।
সূত্রঃ বিডি প্রতিদিন
ছবিঃ সংগৃহীত