রোদ ঠেকাতে সানগ্লাস

রোদ ঠেকাতে সানগ্লাস

রোদ থেকে বাঁচতে চোখের যত্নে চাই রোদচশমা, প্রচলিত ভাষায় যাকে ডাকি সানগ্লাস এটি যে শুধু রোদে চোখকে আরাম দেয় তা নয়, ধুলাবালি থেকেও দেয় সুরক্ষা মেটায় ফ্যাশনের আবদারও তবে সানগ্লাস বেছে নিতে হবে চেহারার শেপ এবং ব্যবহারের বিভিন্নতার বিবেচনা করে।

রোদচশমার রকমফের-

পাইকারি চশমার আড়ত বলে খ্যাত পুরান ঢাকার পাটুয়াটুলীর আরিয়া অপটিকসের বিক্রেতা শেখ রাশেদ প্রথমেই জানিয়ে দিলেন, সানগ্লাস আছে নানা রকম। বাংলাদেশ চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক জাহিদ আহসান মেনন জানিয়েছেন রকমগুলোর সুবিধা-অসুবিধার কথাও

পোলারাইজড : আলোর প্রতিফলনের তীব্রতায় অনেক সময় চোখ ঝলসে ওঠে, যা আমাদের দেখার ক্ষমতা হ্রাস করে। পোলারাইজড গ্লাস আলোর এই তীক্ষ ধাক্কা থেকে আমাদের চোখকে বাঁচায়। বিশেষ করে সাঁতারের সময় ধরনের গ্লাসের ব্যবহার করা হয়। গ্লাসে রয়েছে বিশেষ ধরনের ফিল্টার

ইউভি : আল্ট্রা ভায়োলেট বা ইউভি রোদচশমা সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে আপনার চোখকে বাঁচাবে

মার্কারি : মার্কারি রোদচশমাকে মিরর গ্লাসও বলা হয়। ধরনের রোদচশমার বাইরের দিক আয়নার মতো হয়ে থাকে। এই চশমা পরলে বাইরের সব কিছু হালকা খয়েরি বা ধূসর রঙের দেখায়

 

চেহারার ধরন অনুযায়ী রোদচশমা-

চেহারার সঙ্গে সামঞ্জস্য এবং নিজের চোখের আরাম- এই দুইয়ের সমন্বয়ে বেছে নিতে হবে রোদচশমা। মনির হেয়ার বিউটি পার্লারের মেকআপ আর্টিস্ট মনির হোসেন বলেন, অবশ্যই সানগ্লাস কেনার সময় চেহারার ধরন, ব্যক্তিত্ব মাথায় রাখা দরকার।

১. মুখের আকৃতি অনুযায়ী গোলগাল মুখে গোল ফ্রেম ব্যবহার না করে ক্যাটস আই কিংবা এভিয়েটর ফ্রেমের চশমা পরা যেতে পারে। এতে ভ্রু ঢেকে থাকবে এবং গোল চেহারাকে কিছুটা লম্বাটে দেখাবে।

২. কারো মুখ যদি হয় ডিম্বাকৃতি, তাহলে তাঁকে মানাবে গোল ফ্রেমের রোদচশমায়। চারকোনা ফ্রেমের কোনাটা গোলাকৃতিএমন চশমা মানিয়ে যাবে এই রকম চেহারার সঙ্গে।

          

৩. হার্ট শেপ চেহারা যাঁদের, তাঁদের কপাল চওড়া চোয়াল সরু থাকে। ক্যাট আই, স্পার্ক টাইপের সানগ্লাস বেশি মানায় এসব চেহারার সঙ্গে।

         

৪. বর্গাকৃতির চেহারায় মেটালিক ফ্রেম অথবা গ্লাসের নিচের অংশ রিমলেস সানগ্লাস বেশি মানাবে

        

চিকিৎসকের পরামর্শ

অধ্যাপক জাহিদ আহসান মেনন বলেন, রোদচশমা সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চোখকে বাঁচায়। এসব ক্ষেত্রে কালো চশমার থেকে অ্যান্টি রিফলেকশন বা ইউভি গ্লাস বেশ কাজে দেবে

কারো কারো চোখের পানি কম থাকে, তাঁদের তীক্ষ আলো সহ্য করতে সমস্যা হয়। সে ক্ষেত্রে রোদচশমা তাঁদের চোখে আরাম দেবে। রোদচশমার সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো এটি আমাদের চোখকে বাতাসে ভাসতে থাকা ধুলাবালি থেকে বাঁচায়। যাঁদের পাওয়ার চশমা পরতে হয়, তাঁরা রোদ থেকে বাঁচতে চশমাকে টিনটেড কালার বা অ্যান্টি রিফলেকশন করে নিতে পারেন

বাজার যাচাই

আরিয়া অপটিকসের বিক্রেতা শেখ রাশেদ জানান, পোলারাইজড রোদচশমা পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়, আল্ট্রা ভায়োলেট বা ইউভি গ্লাস ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, মার্কারি (কাচ ফাইবার) ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, সাধারণ প্লাস্টিকের ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, কাচের ওয়েফেরার মডেলের রোদচশমার দাম ৪০০ থেকে এক হাজার টাকায়

পোলারাইজড রোদচশমার আছে নানা ধরন ব্র্যান্ড। দামেও আছে তারতম্য। পোরশে, বিএমডাব্লিউ, কার্টিয়ার, গুচি, পুলিশ ব্র্যান্ডের নাম খচিত রোদচশমা দেখা গেল দোকানে। এসব রোদচশমার দাম ৯০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা। জানা গেল বেশির ভাগ চশমাই আমদানি করা হয়েছে চীন থেকে

ধানমণ্ডি সাতমসজিদ রোডের আই কিং দোকানের বিক্রয়কর্মী মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানালেন, হালকা গাঢ় রঙের শেইডযুক্ত রোদচশমাগুলোই ক্রেতাদের বেশি পছন্দের

আর যাঁরা সাইকেল বা মোটরসাইকেল চালান, তাঁদের জন্য পাওয়া যাচ্ছে বিশেষ আকৃতির বাঁকানো রোদচশমা

রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের ফ্যাশন অপটিকস থেকে আফজাল হোসেইন জানালেন,

অরিজিনাল বিভিন্ন বিদেশি ব্র্যান্ডের রোদচশমা পাওয়া যাবে তাঁদের কাছে। এসব রোদচশমার দাম পাঁচ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা। সিকে, পোরশে, জার্মানির স্প্রিট, এলি, জাপানের রোডেন স্টক সারমেনসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রোদচশমা আছে তাঁদের কাছে

 

সূত্রঃ দৈনিক কালের কন্ঠ

ছবিঃ সংগৃহীত