জোবেরা রহমান লিনু’র স্টাইল
গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তালিকাভুক্ত টেবিল টেনিস তারকা জোবেরা রহমান লিনু। অসাধারণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এই নারী ক্রীড়াবিদ সাজপোশাকে তার নিজস্ব স্টাইলের কারণেও বেশ প্রশংসনীয়। ঘর সাজানোর পুরনো দিনের উপকরণ, সাজপোশাকের অনুষঙ্গ সংগ্রহের প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। ফিট থাকতে নিয়মিত ব্যায়াম করেন। আজকের তারার স্টাইলে লিনু জানিয়েছেন তার পছন্দ-অপছন্দের নানা কথা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কেয়া আমান
পোশাকে নিজস্ব নকশা-
জোবেরা রহমান লিনু নিজের পোশাকের নকশা নিজেই করে থাকেন। প্রিয় রঙের তালিকায় রয়েছে সাদা, কালো ও সবুজ। স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন সালোয়ার-কামিজে। সাধারণত উৎসব অনুষ্ঠান ছাড়া পরেন না। বাসায় বা কর্মব্যস্ত সময়ে জিন্স, ফতুয়া পরেন অধিকাংশ সময়। নিজস্ব স্টাইল সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘চলতি ট্রেন্ড নয়, আমার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানাবে এমন পোশাক পরি। আর সেটা অবশ্যই আরামদায়ক হতে হবে। মুখোশটাকে নয়, আমি মুখশ্রীটাকে ধারণ করার চেষ্টা করি।’
স্টাইলে স্বকীয়তা-
ছোট চুলের ছাঁট নিজস্ব স্টাইলে রূপ দিয়েছেন জোবেরা রহমান লিনু। তিনি বলেন, ‘ছোট চুলের কাট আমার চেহারার সঙ্গে মানিয়ে যাওয়ায় এটাকে আমার স্টাইল করে নিয়েছি। কাজল লাগাতে খুব পছন্দ করি। বিভিন্ন দেশে গেলে মালা, ঘড়ি আর জুতা সংগ্রহ করি। অন্য দেশের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে কোটপিন সংগ্রহ করার নেশাও রয়েছে। এগুলো আমার খুব প্রিয় অনুষঙ্গ।’
এক টুকরো অবসরে-
কাজের ফাঁকে কিংবা টুকরো অবসরে ঘর সাজাতে ভালোবাসেন জোবেরা রহমান লিনু। ঘর সাজানোর জন্য দেশ-বিদেশ থেকে পুরনো দিনের স্মারক, প্লেট সংগ্রহ করতে পছন্দ করেন। অ্যান্টিকের প্রতি রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। সকালের নাশতা শেষ করে বেশ কিছুটা সময় একা একাই খাবার টেবিলে সময় কাটান। এ সময় কখনো পত্রিকা পড়েন, কখনো লেখালেখি করেন। কখনো আবার গান শুনতে শুনতে ফেসবুকে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেন। ভালোবাসেন ঘুরে বেড়াতেও। তিনি বলেন, ‘প্রায়ই সন্ধ্যার পর গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ি লং ড্রাইভে। দেশে-বিদেশে প্রচুর ঘুরেছি। ঘুরে বেড়ানোর প্রায় সব জায়গাই আমার ভালো লেগেছে। কারণ সব জায়গারই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য। এর মধ্যে ইউরোপ মহাদেশের বিভিন্ন দেশে সবচেয়ে বেশি ঘোরা হয়েছে।’
থাকেন সজীব ও প্রাণবন্ত-
সবুজে ঘেরা কাপ্তাই আর সিলেটে বড় হওয়া হওয়া লিনু নিজেও যেন চিরসবুজ। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে চেহারায় একটা গাম্ভীর্য ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেন সব সময়। কিন্তু ঠোঁটের কোণে মিষ্টি একটা হাসি যেন সব সময় লেগেই থাকে। বলেন, ‘বয়সটা বেড়েছে ঠিকই কিন্তু জীবনটাকে এখনো উপভোগ করি সেই ছেলেবেলার মতো। এটাই আমাকে প্রাণবন্ত রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে আমি সব সময় পরিপাটি থাকি এবং নিয়ম মেনে চলি। কাজের মধ্যে যেমন ডুবে থাকতে ভালোবাসি, তেমনি একেবারে নিজের জন্যও সময় রাখি। ডিম ভাজি, আলু ভর্তা, চিংড়ি দিয়ে করল্লা ভাজিসহ পছন্দ দেশীয় অনেক ধরনের খাবারই। কিন্তু খাবারদাবার সব সময়ই একটু হিসাব-নিকাশ করে খেতে চেষ্টা করেছি। এখনো করি। ছোটবেলা থেকেই এখন পর্যন্ত দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় দুধ, ডিম ও কলা রেখেছি। এখনো সজীব থাকার এটাও একটা কারণ। সেই সঙ্গে নিয়মিত ব্যায়াম করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সফলতা এলেও নারীদের এখনো স্বাধীনতা আসেনি। সময় বদলালেও দৃষ্টিভঙ্গি এখনো বদলায়নি। এ থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। প্রত্যেক নারীকেই স্বাবলম্বী হতে হবে। আমার বিশ্বাস স্বাবলম্বিতা এলে একদিন স্বাধীনতাও আসবে।’
সূত্রঃ দৈনিক আমাদের সময়
ছবিঃ সংগৃহীত