নতুন রূপে পুরনো পোশাক
মায়েদের তুলে রাখা পুরনো শাড়ি তো ভালোবেসে পরাই যায়। সেই সঙ্গে কোনো কারণে ছিঁড়ে কিংবা কোথাও একটু ছিদ্র হয়ে গেলে বা ফেসে গেলে সেই শাড়ি আর পরা হয় না। তুলে রাখা হয়। কিন্তু এটা থেকেই নতুন ডিজাইনের সালোয়ার, কামিজ, কুর্তি, টপস, ফতুয়া, লেহেঙ্গা বানিয়ে ফেলা সম্ভব বলে জানালেন রঙ বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার সৌমিক সাহা। তিনি বলেন, ‘শাড়ির সঙ্গে থান কাপড়ের বেশ মিল। থান কাপড় কেটে যেসব পোশাক বানানো সম্ভব, শাড়ি থেকেও তা করা যায়। মায়েদের তুলে রাখা শাড়ি থেকে নতুন ডিজাইনের কাপড় বানানো অনেকটা রিসাইকেলের মতো।’
মেয়েদের মায়ের শাড়ির নতুন ব্যবহারের মতো ছেলেদের বাবার পাঞ্জাবি পরার ক্ষেত্রে ততটা সুবিধা পাওয়া সম্ভব নয়। তার কারণ, পাঞ্জাবি শাড়ির মতো লম্বা থান কাপড়ের মতো নয়। আগে বাবারা একটু ঢিলেঢালা পাঞ্জাবি পরতে পছন্দ করতেন। সেটাকে হয়তো কেটে চাপিয়ে এখনকার মতো ট্রেন্ডি লুক দেওয়া সম্ভব। কিংবা ফতুয়াও বানিয়ে নেওয়া যায়। পোশাকটা আগে থেকেই তৈরি বলে পাঞ্জাবিকে আর ততটা মোডিফাই করা যায় না, একেবারে নতুন কিছু করা যায় না। একটু কাটছাঁট করে হয়তো ব্যবহার করা যেতে পারে।
মেয়ে যদি ছোট হয়, তাহলে পুরনো শাড়ি থেকে তার জন্য এক সেট সালোয়ার-কামিজ বানিয়ে নিতে পারবেন একটি শাড়ি থেকেই। আর মেয়ে যদি বড় হয়, তাহলে শুধু কামিজ, ফতুয়া বা টপস বানানো যেতে পারে। চাইলে দুই থেকে তিনটি শাড়ির কম্বিনেশন করে একটা পোশাক বানিয়ে নিতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে পোশাকটি আরো জমকালো হবে। পুরনো শাড়ির আঁচল ও পাড় সাধারণত একটু গর্জিয়াস ধরনের হয়। সেটি কেটে একজন নারী তাঁর পোশাকে ইয়গ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। ফ্রন্টে ব্যবহার করে কামিজ বা টপস বানিয়ে নেওয়া যায়। কামিজ, ব্লাউজের হাতায় বা বুকের ইয়গে এই পাড় ব্যবহার করা যায়। শাড়িতে যদি সিল্কের কাজ থাকে, সেটা থেকেও এটা করা যাবে।
সৌমিক বলেন, ‘কেউ চাইলে পুরো পোশাক বানাতে শুধু পুরনো শাড়ি ব্যবহার করতে পারেন; আবার বাজার থেকে শাড়ির সঙ্গে ম্যাচ করে লেস কিনে লাগিয়ে নিতে পারেন। আবার পোশাকটা শাড়ি দিয়ে বানিয়ে বাজার থেকে শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে একটি ওড়নাও কিনে নিতে পারেন। পালাজ্জো বা লেগিংস কিনে নিতে পারেন। তাতে পুরো পোশাকটায় ম্যাচিং ভাবটা আরো সুন্দরভাবে ফুটে উঠবে। তখন হয়তো সহজেই কেউ বুঝতেই পারবে না, এটা পুরনো শাড়ি থেকে বানিয়ে নেওয়া হয়েছে।’
শুধু শাড়ি, পাঞ্জাবি নয়; চাইলে অন্য সব পুরনো পোশাকও নতুন করে ব্যবহার করতে পারেন। দরকার শুধু কাটছাঁটে একটু পরিবর্তন আর ভ্যালু অ্যাড করা।
নতুন পোশাকের মতো পুরনো পোশাক দিয়ে বানানো কামিজ, সালোয়ার, টপস, কুর্তি, ফতুয়া কিন্তু যেনতেনভাবে ফেলে রাখা যাবে না। এর সঙ্গে আবেগের একটা সম্পর্ক তো রয়েছেই। পাশাপাশি তার সঙ্গে যত্ন-আত্তির বিষয়টাও নিশ্চিত করতে হবে। ব্যবহার শেষে সুন্দর করে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে ভাঁজ করে শুকনো কোনো স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে।
সূত্রঃ দৈনিক কালের কন্ঠ