নিমন্ত্রণে গর্জিয়াস শাড়ি আর জমকালো সাজ

নিমন্ত্রণে গর্জিয়াস শাড়ি আর জমকালো সাজ

যে কোনো অনুষ্ঠানে নিজেকে ভিন্ন লুকে সাজাতে সবারই ভালো লাগে। ঈদের পর জমকালো উৎসব বা অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিষয়টা একটু ভিন্ন। যিনি কম শাড়ি পরেন, তিনিও চান ঈদের পর উৎসব বা অনুষ্ঠানে একটা গর্জিয়াস শাড়ি পরতে। কারণ ঈদের পরের উৎসব, পার্টিতে মিশে থাকে ঈদের আমেজও। তাই এ সময় জমকালো সাজপোশাকে সেজে উঠুন নিমন্ত্রণে। যে কোনো উৎসব অনুষ্ঠানে তাই নজরকাড়া একটা শাড়ি পরার ইচ্ছে থাকে সবারই। বিশেষ করে দাওয়াত বা পার্টিতে পরার জন্য প্রায় সবাই চায় গর্জিয়াস একটা শাড়ি। সঙ্গে জমকালো সাজ। ঈদের পর নিমন্ত্রণে গর্জিয়াস শাড়ি আর জমকালো সাজ নিয়ে আজকের লিখা।

 

কেমন শাড়ি পরবেন ?

নিমন্ত্রণের প্রস্তুতির প্রথমেই ভাবতে হয় পোশাক নিয়ে। একেবারেই সাদামাটা পোশাক নিশ্চয়ই গর্জিয়াস পার্টিতে মানাবে না। জমকালো পার্টির জন্য চাই একটা মানানসই শাড়ি। এ জন্য জানা প্রয়োজন ফ্যাশনের চলতি ধারা। পাথর, চুমকির, লেইস বসানো জাঁকজমক শাড়ির চল এখন কম। গুরুত্ব পাচ্ছে হালকা নকশার সরু পাড়ের শাড়ি। ‘হাফ সিল্ক, কটন, অ্যান্ডি, জামদানি, মসলিনের ঐতিহ্যবাহী শাড়ি রয়েছে উৎসব বা নিমন্ত্রণের প্রথম পছন্দে’ বললেন ফ্যাশন ডিজাইনার লিপি খন্দকার। তিনি আরও বলেন, ‘পার্টিতে পরার জন্য আমাদের দেশীয় ঐতিহ্যবাহী শাড়িই সেরা। জরি-চুমকির কাজ বাদ দিয়ে ট্রেডিশনাল শাড়িতে ছিমছাম বুটি নকশা, সুতার কাজ, কারচুপি, মেশিন এমব্রয়ডারির কাজে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সরু পাড় ও আঁচল দেখা যাবে চলতি ফ্যাশনে।’

এ সময় দিনের বেলা দাওয়াতে অনায়াসে বেছে নিতে পারেন সুতি, রেশমি কটন, কোটা, জুট কটন, হাফ সিল্ক শাড়ি। সুতি শাড়িতে হাতের কাজ, গুজরাটি, স্ক্রিন প্রিন্ট, মেশিন এমব্রয়ডারির নকশা এখন বেশি ব্যবহার হচ্ছে। কাজ ভারী হলেও এসব নকশায় গরম কম লাগে। রাতের পার্টিতে ভালো লাগবে একটু ঝলমলে শাড়ি। এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিতে পারেন রাজশাহী সিল্ক, ঢাকাই জামদানি, মসলিন, কাতান শাড়িতে জারদৌসি, কারচুপি, ইরি কাজ, জরি সুতার কাজ। জমিনে হালকা, পাড়ে ভারী নকশার শাড়ির জনপ্রিয়তা এখন বেশি। স্টোনের ভারী কাজের শাড়ি পরতে চাইলে জর্জেট, সিল্কের ওপর জারকান স্টোন, জারদৌসি, এমব্রয়ডারি কারচুপি কাজ জমকালো লুক আনবে। লাল, মেরুন, নীল, সবুজ, কালো ধাঁচের রঙগুলো পার্টির জন্য পারফেক্ট।

 

ফ্যাশন ডিজাইনার নুসরাত আক্তার লোপা জানালেন, ‘এখন ক্রেতাদের নজর কাড়ছে পেটানো কাজের ঐতিহ্যবাহী সব শাড়ি। কাতান, মসলিনের পাশাপাশি পিওর সিল্কের ওপর স্ক্রিন প্রিন্ট, গোটাপাত্তি, উলেন সুতার নকশার ট্রেডিশনাল শাড়ি। যেহেতু একটু গরমের সময়, তাই সুতির ওপর স্কিন প্রিন্ট, এমব্রয়ডারি, কারচুপির ভারী কাজের শাড়ি রাতের দাওয়াতের জন্য আরামদায়ক ও আকর্ষণীয়।’

 

শুধু শাড়ি নয়, এখন পার্টি পোশাকে শাড়ির সঙ্গে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ব্লাউজেও জানালেন ডিজাইনার লিপি খন্দকার। তিনি বলেন, ‘ব্লাউজের গলার নকশায় হাইনেক, ফ্রিলের ব্যবহার ছাড়াও সুতা, স্টোনের ভারী কাজ এখন ব্যবহার হচ্ছে। নকশার পাশাপাশি গুরুত্ব পাচ্ছে ব্লাউজের প্যাটার্নও। টপস, কোটি, কোমর পর্যন্ত লম্বা ব্লাউজ পার্টিতে নজর কাড়বে।’

 

কেমন হবে গর্জিয়াস শাড়ির সঙ্গে সাজ ?

রেড বিউটি স্যালনের সিইও ও রূপ বিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন বলেন, শাড়ি এবং উৎসব দুটোই যেহেতু জমকালো তাই একেবারেই লাইট সাজ কিন্তু ভালো লাগবে না। সাজটা একটু গর্জিয়াস হতে হবে। তবে খুব সতর্কতার সঙ্গে সাজতে হবে। যাতে জবরজং না লাগে। সাজের শুরুতেই প্রাইমার লাগিয়ে নিন। এরপর প্যানস্টিক কিংবা ফাউন্ডেশন দিয়ে কনসিলার দিন। মুখের দাগ ঢেকে ফেলতে কনসিলার খুব গুরুত্বপূর্ণ। তারপর ফেস পাউডার দিন। এখন কনট্যুরই ট্রেন্ড চলছে। এতে সাজ নিঁখুত হয়। কনট্যুরিং করে শিমারি ব্লাশন দিন। গর্জিয়াস লুক আসবে। চোখে শাড়ির রঙের আইশ্যাডো দিয়ে কনট্যুরিং করুন। এরপর ভ্রুর নিচে এবং চোখের পাতার কর্নার ধরে হাইলাইটিং করুন। মোটা করে ভ্রু আর্ট করুন এবং মোটা করে আইলাইনার দিন। তারপর কাজল ও মাশকারা দিয়ে চোখে আইল্যাশ পরে ফেলুন। সঙ্গে লেন্স পরলেও বেশ লাগবে। যেহেতু চোখের সাজ গর্জিয়াস হচ্ছে, তাই ঠোঁটে এলিগেন্ট বা ন্যুড শেডের লিপস্টিক দিন। পার্টি সাজের সঙ্গে কার্লি বা ব্লো ডাই করে চুল ছেড়ে রাখতে পারেন। সুন্দর কোনো খোঁপা করে বেঁধেও রাখা যায়। নিচু করে ডাউন বান এখন স্টাইলিশ হেয়ার স্টাইল। অবাধ্য চুলটাকে কাঁটার বাঁধনে বেঁধে রাখলেও মন্দ লাগবে না।

 

কেমন গহনা ?

মুক্তা, ডায়মন্ড কাট গহনাসহ বিভিন্ন ধরনের গহনা ব্যবহার হচ্ছে। তবে জমকালো সাজপোশাকের সঙ্গে গহনা হতে হবে ছিমছাম, নয়তো জবরজং লাগবে। মুক্তার লেয়ার সীতাহার, চোকার, লেয়ার নেকলেস, ঝুমকা পার্টি শাড়ির জন্য মানানসই। ‘সেমি রুপার ভারী কাটাইয়ের কাজের গহনার জনপ্রিয়তা এখন বেশি।

 

 

সূত্রঃ দৈনিক আমাদের সময়

ছবিঃ সংগৃহীত