পুরুষের সানগ্লাস
ফ্যাশন তো হয় বটেই, রোদ থেকে চোখ বাঁচায় রোদচশমা। ছেলেদের ফ্যাশন অনুষঙ্গের মধ্যে অন্যতম এই রোদচশমার ব্যবহার বেড়েছে। মুখের গড়ন বুঝে রোদচশমার ধরনও বদলাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
চশমা তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলো নানা রকম নিরীক্ষা করে মানানসই রোদচশমা তৈরি করছে। মুখের গড়নের ওপর নির্ভর করে চশমার ডাটি, মানে ফ্রেমের আদল। সব ধরনের চেহারার গড়নে সব রোদচশমা মানাবে না। তাই রোদচশমা কেনার আগে বুঝে নিতে হবে কোনটা কোন মুখে মানাবে।
গড়ন বুঝে রোদচশমা-
ছেলেদের মুখের গড়ন ৪ থেকে ৯ ভাবে শনাক্ত করে রোদচশমা তৈরি করছে অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। তবে সাধারণত চার ধরনের মুখের গড়ন বেশি দেখা যায়। এর মধ্যে আছে গোলাকার, ডিম্বাকৃতি, চারকোনা ও পানপাতার মতো বা হৃদয়াকৃতি মুখের গড়ন।
যাঁদের চেহারা গোলাকার, তাঁদের পাতলা, কৌণিক রোদচশমা পরলে ভালো দেখাবে। তবে মুখ ডিম্বাকৃতির হলে সুবিধা বেশি। কারণ, এমন চেহারায় সব ধরনের রোদচশমা সহজে মানাবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, চশমা যেন কপাল ঢেকে না ফেলে।
আপনার চেহারা যদি চারকোনা গড়নের হয়, তাহলে আপনি অনায়াসে হলিউড অভিনেতা টম ক্রুজ বা ফুটবলার ডেভিড বেকহামকে অনুসরণ করতে পারেন। কারণ, এই দুই তারকারই চেহারার গড়ন চারকোনা আকারের। এই ধরনের চেহারায় সাধারণত আয়তক্ষেত্রাকারের রোদচশমা ভালো মানাবে। আবার অভিনেতা রায়ান গসলিংয়ের মতো আপনার মুখের গড়ন পানপাতার মতো হলে অ্যাভিয়েটর বা জ্যামিতিক আকারের রোদচশমা পরতে পারেন।
ডাক পিওনের সহপ্রতিষ্ঠাতা রুবেল হোসেন বলেন, চার কোনা শেপের মার্কারি গ্লাসগুলো বেশি চলছে এখন। বিশেষ করে তরুণদের কাছে। আর দোকানে এসে ক্রেতারা পরীক্ষা করে নিচ্ছেন, রোদচশমায় ইউভি প্রটেকশন আছে কি না বা কাচটা পোলারাইজড কি না। রোদচশমায় ইউভি প্রটেকশন মানে সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষা দেওয়া। আর কাচটা যদি পোলারাইজড হয়, তাহলে সেটা বাইরের দৃশ্যকে স্বচ্ছ দেখায় এবং চোখকে ঠান্ডা রাখে।
যা আছে বাজারে-
সম্পূর্ণ ফ্রেমে ঘেরা, কাচের একাংশ ফ্রেমে ঘেরা ও ফ্রেম ছাড়া—এই তিন ধরনের রোদচশমাই আছে দোকানে। আর ফ্রেমে ভিন্নতা এনেছে প্লাস্টিক, ধাতব, কাঠ বা শক্ত কোনো প্রাণীর খোলস।
আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের অনেক রোদচশমা এখন পাওয়া যায় ঢাকাসহ বড় শহরের কিছু কিছু দোকানে। সেখান থেকেও বেছে নিতে পারেন।
কিছুটা ভালো মানের রোদচশমা কিনতে হলে দাম শুরু হবে ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে। তবে ব্র্যান্ডের রেপ্লিকা রোদচশমা পাওয়া যায়। এসবের দাম ৪০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। হালকা–পাতলা দেশে তৈরি কম দামের রোদচশমা কেনা যাবে ১০০ থেকে ৩০০ টাকায়।
কাঠের ফ্রেমে তৈরি রোদচশমায় খুঁজে পাবেন নতুনত্ব। রোদচশমা: উডপেকার
রোদচশমার যত্ন-
মনমতো রোদচশমা খুঁজে পাওয়ার পর যেমন আনন্দ হয়, সেটা নষ্ট হয়ে গেলে মন তো খারাপ হবেই। তাই রোদচশমা যত্নে রাখা জরুরি। বিশেষ করে গরম ও ধুলাবালুর এই মৌসুমে। কারণ, এই সময়ে প্রতিদিন রোদচশমা পরা হয়। তাই যেভাবে যত্ন নিতে পারেন—
* একটি সূক্ষ্ম তন্তুর কাপড় রোদচশমার সঙ্গে রাখুন। নরম এই কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করে নিন রোদচশমা।
* টিস্যু পেপার দিয়ে রোদচশমা পরিষ্কার করবেন না। এতে কয়েকবার মুছলেই কাচের ওপর দাগ পড়ে যাবে। এমনকি গায়ের শার্ট দিয়েও অনেকে রোদচশমা পরিষ্কার করেন, যা ঠিক না।
* সাবান বা ডিটারজেন্ট পাউডার দিয়ে চশমা পরিষ্কার করা যাবে না। রোদচশমা পরিষ্কার করতে বিশেষ ধরনের তরল (লেন্স ক্লিনার) পাওয়া যায়, যা ব্যবহার করা ভালো।
* সবচেয়ে ভালো হয় শুরুতে নরম সূক্ষ্ম তন্তুর কাপড়ে রোদচশমা আলতো করে মুছে, তারপর চশমা পরিষ্কারের বিশেষ তরল দিয়ে মুছে নিলে।
* চশমা ব্যবহারের সময় কাচে হাত না দিয়ে ফ্রেমে ধরা ভালো। এতে কাচ সুরক্ষিত থাকে।
* রোদচশমা ব্যবহারের পর নির্ধারিত বক্সে ভরে রাখুন।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো