মুখের সঙ্গে মানিয়ে দুল
প্রাচ্য কি পাশ্চাত্য, ফ্যাশন-সচেতন নারীর এক অনন্য অনুষঙ্গ কানের দুল। মানানসই কানের দুলজোড়া বেছে নেওয়ার জন্য অনেক দিকেই খেয়াল রাখতে হয়। পোশাকের ধরনের সঙ্গে মিল রেখে যেমন কানের দুল বেছে নেওয়া হয়, তেমনি মুখের আকৃতির দিকেও খেয়াল রাখা প্রয়োজন।
রেড বিউটি স্যালনের রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভিন বলেন, ‘গয়না, পোশাক কিংবা সাজের মাধ্যমে কারও ব্যক্তিত্ব ফুটে ওঠে। বিভিন্ন মানুষের মুখের আকৃতি বিভিন্ন ধাঁচের হয়ে থাকে। সব ধরনের আকৃতির সঙ্গে সব ধরনের কানের দুল মানায় না। তাই নিজের মুখের আকৃতির দিকে খেয়াল রেখে কানের দুল বেছে নেওয়া ভালো।’
কনক দা জুয়েলারি প্যালেসের ডিজাইনার লায়লা খায়ের বললেন, গয়না বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তিত্ব ও নিজস্ব পছন্দ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে কানের দুলের ক্ষেত্রে এরপরই চলে আসে মুখের আকৃতির বিষয়টি।
লম্বাটে মুখের জন্য-
আফরোজা পারভিন বললেন, লম্বাটে মুখের জন্য বড়, গোলাকার দুল বেছে নেওয়া ভালো। এতে চেহারায় ভারসাম্য থাকবে। এ ক্ষেত্রে লম্বা ঝোলানো দুল মানানসই নয়।
তবে কেউ যদি ঝোলানো কানের দুল খুব বেশি পছন্দ করেন, সে ক্ষেত্রে চুল খোলা রেখে মাঝারি আকারের লম্বা দুল পরা যেতে পারে বলে জানালেন লায়লা খায়ের কনক।
ডিম্বাকৃতির মুখে-
আপনার মুখের আকৃতি যদি কেট হাডসনের মতো কিছুটা ডিম্বাকৃতির হয়, তবে যেকোনো কানের দুলই নিশ্চিন্তে পরতে পারেন আপনি।
গোলাকার মুখের জন্য-
কেট উইন্সলেটের মুখের মতো গোলাকার মুখের জন্য লম্বাটে, বড় দুল বেশ মানানসই। গোল মুখের সঙ্গে গোলাকার দুল একেবারেই মানাবে না।
চৌকো, ত্রিকোনাকৃতি বা পানপাতার আকৃতির মুখের জন্য-
এ ধরনের মুখের জন্য ছড়ানো, বড় কানের দুল বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন বিশেষজ্ঞরা। পাশা, মাকড়ি বা এ-জাতীয় বড় দুল বেশ মানাবে।
মুখ ও ঘাড়ের গঠনের আরও কিছু বিষয় খেয়াল রাখার পরামর্শ দিলেন আফরোজা পারভিন:
* কারও কারও চেহারায় একটা বাঙালিয়ানা আমেজ থাকে, তাঁদের মুখের গঠনটাই এই ধাঁচের। তাঁরা অনায়াসে মাদুলি ও বাঙালি ঘরানার গয়না পরতে পারেন। দেশজ ঐতিহ্যে তৈরি করা নানান রকম দুলে তাঁদের দারুণ মানাবে। মুক্তার দুলও এমন চেহারায় মানানসই।
* মুখের গড়নে খানিকটা পাশ্চাত্যের ধাঁচ থাকলে রিং পরতে পারেন। এ ক্ষেত্রে দেশীয় ঘরানার গয়নার পরিবর্তে আধুনিক প্যাটার্নের গয়না বেশি মানাবে।
* ঘাড়ের আকার যদি একটু ছোট হয়, তাহলে খুব বড় ঝোলানো দুল এড়িয়ে চলুন। কানের দুল যদি কাঁধ ছুঁয়ে থাকে, তবে তা দৃষ্টিকটু লাগবে।
চেহারার গড়ন আর নিজের পছন্দের ব্যাপারে পরামর্শ দিলেন লায়লা খায়ের—
* চোয়াল বড় আকারের হলে বড় দুল বেছে নিতে পারেন। তাহলে দুলজোড়া কান থেকে নেমে চোয়ালের পাশটাও একটু ঢেকে রাখবে। আবার মুখটা একটু ভাঙা হলেও এ ধরনের বড় দুল বেশ মানানসই।
* কেউ গয়নাকে প্রাধান্য দিয়ে চুল বাঁধেন, কেউ আবার মূল প্রাধান্য দেন চুলের সাজে। বিষয়টি আসলে নির্ভর করে নিজের পছন্দের ওপর। মুখের গড়ন সরু হলে বড়, ভারী দুল মানিয়ে যায় সহজেই। কিন্তু চওড়া ও বড় মুখের কারও যদি এ ধরনের বড় আকারের দুল ভীষণ পছন্দ হয়েই যায়, সে ক্ষেত্রে সাজ-পোশাকে খানিকটা পরিবর্তন আনতেই হবে। যেমন হালকা নকশার কালো শাড়ির সঙ্গে এমন গয়না মানাবে। আবার এ ক্ষেত্রে চুলের সাজটাও হালকা হতে হবে, চুলের হয়তো শুধু নিচের দিকটা সামান্য কোকড়া করে নিলেন। অর্থাৎ, যেকোনো একটিকে ফোকাস করে বাকিগুলোতে কিছুটা ছাড় দিলে সাজটা মানানসই হবে।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, নকশা
ছবিঃ সংগৃহীত
nila
sudor