চোখ বুঝে চোখের মেকআপ

চোখ বুঝে চোখের মেকআপ

সুন্দর চোখ জোড়া পেতে মেকআপেরও রয়েছে সমান গুরুত্ব। এমনটাই মানছেন নামজাদা সব রূপ বিশেষজ্ঞ। চোখের মেকআপ সুন্দর হলে দেখতে যেমন ভালো লাগে, তেমন নানা ধরনের চোখের মেকআপের সাহায্যে পুরো লুকটাই বদলে ফেলা সম্ভব। আসলে মেকআপ মানে শুধু সুন্দর করে সেজে ওঠাই নয়, বরং চেহারার ছোটখাটো খুঁতগুলোকে ঢেকে, মুখের সুন্দর অংশহুলোকে আরও আকর্ষক করে তোলা। তবে মেকআপ কিন্তু যেমন তেমনভাবে করলে হবে না। প্রয়োজন একটু ধৈর্য এবং দক্ষতার।

 

 

চোখ বুঝে মেকআপ-

চোখের মেকআপের ক্ষেত্রে আগে চোখের শেপ এবং মুখের সঙ্গে অনুপাত কী রকম  বুঝতে হবে। অর্থাৎ চোখ যদি মুখ আন্দাজে বড় হয়, তাহলে মেকআপ হবে একরকম, চোখ ছোট, সরু হলে মেকআপ হবে অন্যরকম। একটু বুঝে শুনে মেকআপ করতে পারলেই কাজ সিদ্ধ হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। চোখের মেকআপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা তো হবেই, তবে আগে বলে রাখি, মেকআপের পাশাপাশি নিয়মিত চোখের যত্নও জরুরি। এজন্য দরকার পর্যাপ্ত ঘুম, সঠিক ডায়েট আর প্রতিদিন নিয়ম করে রূপচর্চা।

 

চোখের মেকআপ নানা রকম হয়। স্মোকি আইজ, ন্যুড মেকআপ, কালারড আইজ, মেটালিক আইজ ইত্যাদি। চোখ ছোট বা বড়, যে কোনো ধরনের চোখের মেকআপ সম্ভব। তবে, পদ্ধতিটা আলাদা।

 

 

বড় চোখের মেকআপ-

বড় চোখ ইলাবরেট আই মেকআপে খুব সুন্দর লাগে। তবে মাথায় রাখতে হবে, চোখ আঁকার সময় আইশ্যাডোর সাহায্যে চোখের শেপ যেন কাল্পনিক বিন্দুতে বেঁধে ফেলা হয়। কারণ আইশ্যাডো ভাসা ভাসা হলে চোখ আরও বেশি ছড়ানো লাগে। আপনার চোখ যদি বড় হয়, অর্থাৎ একটু বেরিয়ে আছে মনে হয় তবে আইলিডের মেকআপ ডার্ক রাখুন। লাইট মেকআপ করতে চাইলে লাইনার একটু মোটা করে লাগান। বড় চোখে স্মোকি আউস করাতে চাইলে ডার্ক ব্ল্যাকের পরিবর্তে বেছে নিন চারকোলের শেড। দেখতে ভালো লাগবে।

 

 

 

 

ছোট চোখের মেকআপ-

যাদের চোখ অপেক্ষাকৃত ছোট, তারা চোখের নিচের পাতার ভিতরের কোণ থেকে বাইরের কোণ অবধি সরু করে কাজল লাগিয়ে ভিতরের দিকে হালকা করে স্মাজ করে দিন। কিন্তু চোখের ওপরে বা নিচের পাতায় মোটা করে কাজল লাগাবেন না, এতে চোখ আরও ছোট দেখাবে। বরং আইশ্যাডো লাগানোর সময় একটু ফ্লো করিয়ে চোখের বাইরের দিকে এক্সটেন্ড করে দিন। দেখতে ভালো লাগবে। ছোট চোখে আইশ্যাডোর পরিবর্তে কালার পেনসিল ব্যবহার করা যেতে পারে।  তবে এতে বেছে নিন হালকা কালার। কারণ হালকা রঙে রিফেকশন বেশি হয়। ফলে চোখ দেখতে অপেক্ষাকৃত বড় লাগে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় চোখে কাজল লাগিয়ে স্মাজ করে স্মোকি লুক দেওয়া যায়। সবশেষে ভ্রুর নিচে আউটওয়ার্ড স্ট্রোকে সামান্য ট্রান্সলুসেন্ট শিমার লাগিয়ে নিন। চোখ আগের চেয়ে বড় দেখাবে।

 

 

খুঁত ঢাকতে মেকআপ-

চোখেল নিচে ভাঁজ, ডার্ক সার্কেলের সমস্যা ইত্যাদি সব খুঁত মেকআপের সাহায্যে ঢেকে ফেলা সম্ভব। যেমন- চোখ যদি বসা হয় সেক্ষেত্রে চোখের নিচের পাতায় মোটা করে কাজল লাগান। কাজলের বদলে কালো আউ পেনসিলও ব্যবহার করতে পারেন। উপরের চোখ সরু করে লাইনার লাগান। দেখতে ভালো লাগবে। যাদের চোখ একটু দূরে দূরে তারা চোখের মেকআপের সময় ইনার কর্নারে ডার্ক শ্যাডো ব্যবহার করুন। এতে চোখ কাছাকাছি দেখাবে। একইভাবে যাদের চোখ খুব কাছাকাছি তারা ইনার কর্নারে লাইট শ্যাডো রেখে আউটার কর্নারে ডার্ক শ্যাডো ব্যবহার করুন। যাদের বয়স পঞ্চাশ পেরিয়েছে, স্বাভাবিকভাবেই তাদের মুখে বলিরেখা, চোখের তলায় ভাঁজ পড়তে শুরু করে। তারা আই মেকআপ করুন হালকাভাবে। চোখে হালকা কাজল, উপরের চোখে সরু লাইনার ভালো লাগবে। চোখের পাতা লম্বা দেখাতে চাইলে মাসকারা শুকিয়ে যাওয়ার পর সামনের দিকটায় আরও একবার মাসকারা লাগিয়ে নিন। এতে চোখের পাতা ঘন দেখাবে।

 

 

চোখের মেকআপ-

প্রথমেই চোখের রং বুঝে আইশ্যাডোর রং নির্বাচন করতে হবে। চোখের রংয়ের সঙ্গে কন্ট্রাস্ট করে এমন আইশ্যাডো ব্যবহার করলে সাধারণত ভালো দেখায়। কালো বা গাঢ় রং চোখের জন্য ধূসর, নীল, সবুজ এবং বেগুনি রংয়ের শেড বেশি মানিয়ে যায়। আর হালকা রংয়ের চোখে তামাটে, বাদামি বা ব্রঞ্জ শেড ভালো মানায়। প্রথমে হালকা করে আইশ্যাডো দিতে হবে। চোখে আইলাইনার দেওয়াটাও দক্ষতার কাজ। আপনার চোখের আকৃতি ভেদে লাইনার প্রয়োগ ভিন্ন হতে পারে। যেমন গোলাকৃতি কিংবা ছোট চোখের জন্য শুধুমাত্র বাইরের কোনায় অথবা শুধু উপরের পাতায় দিলেই চলে। পেনসিলটি প্রথমে হাতের আঙ্গুলে ঘসে একটু নরম করে নিন যাতে চোখে ব্যথা না লাগে। আই পেনসিল দিয়ে আঁকা লাইনের ওপরে একটু পাউডার দিলে লাইনটি আর ছড়িয়ে যাবে না এবং দীর্ঘস্থায়ী হবে। মাশকারা ব্যবহার করার পূর্বে সম্ভব  হলে আইল্যাস কার্লার দিয়ে চোখের পলকগুলো একটু ঘন ও কোঁকড়া করে নিতে পারেন। মাশকারা চোখকে একটা ডেফিনেশন দেবে। আপনার চুলের রং থেকে এক সেড হালকা আইব্রো পেনসিল দিয়ে ভ্রুটা ভালো করে এঁকে নিন। মনে রাখবেন চুলের রং এর চেয়ে গাড় শেডের আইব্রো ব্যবহারে বেমানান লাগে। চোখের নিচে কোনো কালো দাগ বা ডার্কসার্কেল থাকলে কনসিলার দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। মনে রাখতে কনসিলারের রং যেন ত্বকের রংয়ের সঙ্গে ভালো করে ব্লেন্ড হয়ে যায়।

 

 

 

 

 

 

 

সূত্রঃ দৈনিক বিডি প্রতিদিন

ছবিঃ সংগৃহীত