ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে
ধীরপায়ে এগিয়ে আসছে শীত। উত্তরের হাওয়ার সঙ্গে যেমন গরম উড়ে যাচ্ছে তেমনি উধাও হচ্ছে ত্বকের আর্দ্রতা। রুক্ষ শুষ্ক হচ্ছে আপনার ত্বক। কিছুদিন আগেও যে ক্রিম ব্যবহার করতেন সেটি এখন আপনার ত্বককে স্বাভাবিক রাখতে সক্ষম নয়। এই সুযোগে ত্বকে অ্যালার্জি, র্যাশ, ব্রণেরও আবির্ভাব ঘটেছে। এ ধরনের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে দ্রুত ত্বকের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে। এতে করে ত্বকের কোমলতাও বজায় থাকবে। আবহাওয়ার ঠিক এই সময়টাতে যারা অতিরিক্ত ঘামেন তাদের শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পানি বের হয়ে যায়। ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। তাই প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এতে ত্বকের আর্দ্রতা ফিরে আসবে। শুষ্ক ত্বকের অধিকারীদের উচিত এই মৌসুমে ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় এড়িয়ে চলা। এর বদলে নারিকেল ও ডাবের পানি, তাজা ফলের জুস ও লেবুর শরবত পান করতে পারেন।
মৃত কোষ দূর-
ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখতে অবাঞ্ছিত ও মৃত কোষ দূর করার বিকল্প নেই। ত্বকের ওপরে জমে থাকা মৃত কোষ ও বাড়তি দূষণের পরত দূর করতে সপ্তাহে এক থেকে দুবার ত্বক এক্সফলিয়েট করা জরুরি। সেজন্য ওটমিল, মধু, লেবু, টকদই, শসা বাটা ১ চামচ করে নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার মুখে লাগিয়ে অপেক্ষা করুন ১৫ মিনিট। তারপর আলতো হাতে ম্যাসাজ করে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ব্যস ত্বকের কোষ সজিব থাকতে এই উপাদানই যথেষ্ট।
ময়েশ্চারাইজার-
এ সময় প্রতিদিন নিয়ম করে ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে ঘর থেকে বের হওয়ার আগে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। এতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে। সূর্যের তাপের কারণে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হওয়ার সমস্যা থাকবে না। তাছাড়া গোসল করা ও মুখ ধোয়ার পর হালকা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এরপর সানস্ক্রিন মেখে নিন। এতে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকেও ত্বক সুরক্ষিত থাকবে। রাতে ঘুমানোর আগেও ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে।
খাবার-
পানির পাশাপাশি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে জরুরি পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস। সবুজ শাক, তাজা সবজি ও ফলমূল খাওয়া ত্বকের জন্য উপকারী। তাছাড়া ভাজাপোড়া ও অতিরিক্ত মসলাদার খাবার, কোমল পানীয় ইত্যাদি অস্বাস্থ্যকর খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত।
এয়ার কন্ডিশন-
এয়ার কন্ডিশন ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ও আর্দ্রতা শুষে নেয় এয়ার কন্ডিশন। ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে ওঠে। তাই দীর্ঘ সময় এসির মধ্যে না থাকাই ভালো। আর যদি থাকতেই হয় তবে কিছু সময় পরপর অবশ্যই ত্বক ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার ক্রিম লাগিয়ে নিন। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখবে।
তেল-
হিমেল বাতাসের হাত থেকে প্রকৃতিক আর্দ্রতা বাঁচাতে তেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গোসলের আগে ১০ মিনিট তেল মালিশেই মিলবে ত্বকের প্রয়োজনীয় পুষ্টি। ব্যবহার করা যাবে যে কোনো বেবি অয়েল বা অলিভ অয়েল। নিয়মিত ব্যবহারে পুরো শীতকাল ত্বক থাকবে নরম, কোমল ও মসৃণ।
অ্যাভোকাডো মাস্ক-
অ্যাভোকাডো ভর্তা করে এর সঙ্গে ভার্জিন অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিতে হবে। মিশ্রণটি ত্বকে মেখে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। শীতপূর্ব আবহাওয়ায় ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে এর জুড়ি নেই।
সূত্রঃ দৈনিক বিডি প্রতিদিন