প্যাটার্ন বৈচিত্র্যে বর্তমানের পোশাক

প্যাটার্ন বৈচিত্র্যে বর্তমানের পোশাক

বের পোশাকে ট্রেন্ড এবং ঐতিহ্য একসঙ্গে চোখে পড়ে। ঐতিহ্যবাহী পোশাক যেমন- সালোয়ার কামিজ, পাঞ্জাবির কাট, প্যাটার্ন এবং ভ্যালু এডিশনে দেখা যায় ফিউশন। ঈদে এই পোশাকে সাজগোজ বেশি চোখে পড়ে। উৎসবের কামিজে দেখা মেলে মোটিভভিত্তিক কাজ। এমব্রয়ডারি, প্রিন্ট, কারচুপি, হাতের কাজে বসানো হয় বিভিন্ন নকশা। সালোয়ার দেখা যায় ট্রেন্ডি কাটিংয়ের। সব মিলিয়ে পোশাকে ফুটে ওঠে নতুনত্ব।

 

 

সালোয়ার কামিজ বা মেয়েদের যে কোনো পোশাকেই ডিজাইনে রং বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। নীল, কমলা,  গোলাপি, লাল, হলুদ, সবুজ সব পরিচিত রঙেই সেজেছে ঈদ পোশাক। এ বিষয়ে দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড সেইলরের চিফ অপারেটিং অফিসার রেজাউল কবির বলেন, ‘ঈদুল আজহা উপলক্ষে সেইলর তৈরি করেছে বিশেষ ঈদ কালেকশন। সামার ফ্রেন্ডলি বা গরমবান্ধব পোশাকে সাজানো হয়েছে কালেকশনটি। ট্রেন্ডি তরুণ-তরুণীদের জন্য শহুরে জীবনে স্বাচ্ছন্দ্যময় ও আরামদায়ক পোশাক প্রাধান্য পেয়েছে ঈদ কালেকশনে। ওম্যানজ ওয়্যারে থাকছে ফিউশন স্ট্রিটওয়্যার এবং রানওয়ে ইন্সপায়ার্ড কুর্তি। এথনিক, ডাবল লেয়ার, ওভারল এবং ফ্ল্যারেড কুর্তিগুলোতে থাকছে ভিন্ন কাট ও প্যাটার্ন।’

 

 

 

গত কয়েক বছর ধরেই কুর্তা এই দেশের মেয়েদের ট্রেন্ডি পোশাক। লং ও সেমি লং কামিজ একই পথের পথযাত্রী। যা ট্রেন্ডের সঙ্গে অনেকটাই মিশে গেছে। কুর্তার কথা যদি বলা হয়, এই পোশাক এত জনপ্রিয় হওয়ার প্রধান কারণ এর ব্যবহারিক বৈচিত্র্যতা। মানে তা যে কোনো সালোয়ারের সঙ্গে মিলিয়ে পরা সম্ভব। এতে একেক রকম সালোয়ারের ক্ষেত্রে একেক লুক আসে। যা একই কামিজ দিয়েই আনে বৈচিত্র্য ফ্যাশনেবল লুক। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কটি। ট্রেন্ডি কটিগুলোর রয়েছে নানা ধরন। লং, শর্ট, ফ্লেয়ারড ইত্যাদি। মজার ব্যাপার হচ্ছে এক থ্রি-পিসে একটি লুক আসবে, কিন্তু তিনটি কুর্তা কমপক্ষে তিনটি লুক দেবে। আর সালোয়ার এবং কটি পরিবর্তন করে তিন কুর্তা থেকে পনেরোটি ফ্যাশনেবল লুক আনাও সম্ভব। পাঁচ বছর আগের ডিজাইন থেকে কিছুটা হলেও পরিবর্তন দেখা যায় এখনকার ট্রেন্ডি কুর্তায়। সেক্ষেত্রে পরিবর্তন দেখা যায় রং, প্যাটার্ন এবং কাটছাঁটে। সব মিলিয়ে ঈদে এ ধরনের পোশাকই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।

 

 

সময়টা এখন বর্ষাকাল হলেও গরম আছেই। তাই কাট ও প্যাটার্নে নতুনত্ব তো চোখে পড়বেই। তেমনি কিছু ডিজাইনের মধ্যে ঢোলা, কার্ভস্লিভ, বেলস্লিভ উল্লেখ্য। তবে এই ঈদে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়বে ব্যাসিক প্যাটার্ন ও ফ্রককাট। আর ট্রেন্ডি কামিজ বা টপসে সময়ের রং, দেশীয় মোটিভ এবং কৃষ্টি-সংস্কৃতির মিশ্রণে পরিলক্ষিত হয় এখন পারসিয়ান বা ইরানি লুক। ডিজাইন, চিত্রশিল্প, আলোকচিত্রের উৎসাহ হিসেবে ফুলের বৈচিত্র্য, বিশেষত্ব চিরকালীন। আর নারী এবং ফুলের বিশেষ মিল রয়েছে সৃষ্টি থেকে। মেয়েদের টপস, শর্ট কামিজ, টরসোর মতো ড্রেসে ফ্লোরাল প্রিন্টের ব্যবহার তাই সম্পূর্ণ সময়োপযোগী। প্রিন্টে এ ধরনের ডিজাইন বেশি বাস্তব দেখায়। হাল ফ্যাশনে মেয়েদের পছন্দের পোশাকে দেখা মেলে তাই ফুলেল আয়োজন। বুনন বা টেক্সারে ডিজাইনের প্রধান ফোকাস বেশি দেখা যায় মেয়েদের লং কামিজে। আর চলতি ট্রেন্ডে বিশদ আকারে চোখে পড়ে ফ্লোরাল মোটিভের টেক্সার। ফ্লোরাল মোটিভ পোশাকে ভিন্ন শৈলী এনে দেয়। তবে অনেকটা স্ট্রেইট অথবা সিম্পল কাটের প্যাটার্নেই ভালো মানায় এই ধরনের টেক্সার। আর ভালো ডিজাইনে প্রয়োজন হয় কালার ম্যাচিং এবং কনস্ট্রাস্টের। ফুলের বাইরে পরিলক্ষিত হয় জ্যামিতিক নকশা। অথবা অলওভার অন্য কোনো প্রিন্ট। এ সময়ের ফ্রক প্যাটার্ন অথবা ব্যাসিক প্যাটার্নের টপসে ব্যবহৃত মূল কাপড় দুটি। তা হবে সুতি অথবা লিনেন। কোনোটি এই দুটির সংমিশ্রণে। মেয়েদের এই ধরনের পোশাকের সঙ্গে মানানসই হবে চাপা প্যান্ট। অর্থাৎ এমন টাইট প্যাটার্নের প্যান্ট বা সালোয়ার। তা হতে পারে লেগিংস অথবা গ্যাবার্ডিন কাপড়ের চিনোস প্যান্ট। কিংবা ডেনিমের স্লিম ফিট কাটিং। তবে একটি জিনিস অবশ্যই মাথায় রাখা জরুরি, তা হচ্ছে, টপসের সঙ্গে প্যান্ট অবশ্যই মানিয়ে পরতে হবে। ট্রেন্ডে এখন এই দুয়ের কন্ট্রাস্ট চলমান। মানে প্রিন্টেড টপসের সঙ্গে একরঙের চাপা প্যান্ট মানানসই। তাও যতটা সাধারণ রঙের মধ্যে সেরে ফেলা যায়, তত ভালো। এই যেমন সাদা, কালো, ইনডিগো।

 

 

 

 

 

 

সূত্রঃ দৈনিক বিডি প্রতিদিন