এক্সেসরিজ দিয়ে ফুটিয়ে তুলুন আভিজাত্য
ছেলেদের ফ্যাশন ও স্টাইলেও দারুণ বৈচিত্র্য এসেছে। এক্ষেত্রে পোশাকের পাশাপাশি বিভিন্ন এক্সেসরিজ ও অনুষঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সানগ্লাস, হাতঘড়িসহ নানা এক্সেসরিজে আপনি ফুটিয়ে তুলতে পারেন আভিজাত্য।
স্টাইলিশ প্যান্ট, শার্ট বা টি-শার্টেই যে স্মার্টনেস; এমনটা ভাবা ভুল। অনেক সময় জমকালো পোশাকেও ফ্যাশন পূর্ণতা পায় না। দেখতে বেজায় বেঢপ দেখায়। এর পেছনে অবশ্য কারণও রয়েছে। ফ্যাশনবোদ্ধারা মনে করেন, মানানসই এক্সেসরিজের অভাব অনেক সময় দেখতে বেঢপ দেখায়। একটু আগের দিনের কথাই ভাবুন। যে পুরুষ যত ধনী উচ্চবংশীয়, ক্ষমতাবান এবং প্রতিষ্ঠিত ছিল তার শরীরে তত বেশি এক্সেসরিজ শোভা পেত। আসলে তখনকার দিনে এক্সেসরিজের (অলঙ্কার) ব্যাপারটা ছিল আভিজাত্যের প্রতীক। কালের বিবর্তনে সেই আভিজাত্য টিকে আছে কেবল ফ্যাশনেবল এক্সেসরিজ বা অনুষঙ্গ হিসেবে।
ফ্যাশনিয়েস্তায় হাতঘড়ি-
বলা হয়ে থাকে স্মার্টফোন নষ্ট করেছে হাতঘড়ির আবেদন। ধারণাটি ভুল। এই যুগেও ব্যক্তিত্ব, আভিজাত্য আর রুচির পরিচায়ক হিসেবে তারুণ্যের পছন্দ হাতঘড়ি। ফ্যাশন এবং প্রয়োজন দুটোই সেরে নেওয়া যাচ্ছে এর মাধ্যমে। আর এই হাতঘড়ি নিয়ে তরুণ প্রজন্মের মাঝেও উৎসাহের কমতি নেই। মোটা চেইন ও বড় ডায়ালের ঘড়িই পছন্দের শীর্ষে। তবে কিশোর বয়সীরা স্পোর্টস ঘড়িতে মুগ্ধ। ক্যাজুয়াল লুক পেতে চেইন ও বড় ডায়ালের ঘড়িই বেছে নিচ্ছে আজকালের তারুণ্য। ফরমাল লুকে ছোট ডায়ালের চামড়া বা চেইনওয়ালা ঘড়িই সেরা।
সানগ্লাসে স্মার্টনেস-
স্টাইলিশ প্যান্ট, শার্ট বা টি-শার্ট পরলেন ঠিকই; চোখে একটা গগজ চাপিয়েই দেখুন না! মুখের আদলটাই বদলে যাবে। ফ্যাশন উইকের র্যাম্প থেকে শুরু করে ক্রিকেটের মাঠ। ফ্যাশন এবং প্রয়োজন দুটোই ষোলকলা পূর্ণ করে দেবে সানগ্লাস। মোটকথা, ফ্যাশনিয়েস্তায় সানগ্লাস লা জবাব। শুধু যে সূর্যের আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে চোখ বাঁচায় তা নয়, ধুলাবালি থেকেও মুক্তি দেয় সানগ্লাস। তবে কেনার আগে এমন সানগ্লাস কিনুন যা ৯৯% থেকে ১০০% সূর্যের ইউভিএ এবং ইউভিবি রশ্মি থেকে চোখকে সুরক্ষা দেয়। ইউভিএ ৪০০-এর লেভেলযুক্ত সানগ্লাস চোখকে সুরক্ষিত রাখে। তাই সানগ্লাস যেমন হোক না কেন; খেয়াল রাখুন তা যেন আপনার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানিয়ে যায়।
ছেলেদের অলঙ্কার-
আজকালকার ছেলেরা জুয়েলারির সাজে নানা ঢঙে সেজে উঠছে। অনেক ছেলে আজকাল কানেই পিয়ার্সিং করান। কেউ কেউ আবার ভ্রু, ঠোঁট এবং নাকে পিয়ার্সিং করান। হার, নেপডেন্ট, আংটি, রিস্টব্যান্ড নিয়েও এক্সপেরিমেন্ট করছেন ছেলেরা। অনেকে আবার কালো রঙের স্যুটের কাঁধ থেকে বুক পর্যন্ত মেটাল চেইন। তবে সাজের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আপন ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যতা।
ফ্যাশনেবল বেল্ট-
ফ্যাশন ট্রেন্ডে বেল্ট এখন বেশ জনপ্রিয়। বেল্ট ছেলেদের ফ্যাশনে কেবল পরিবর্তনই আনে না, বদলে দেয় স্মার্টনেসের সংজ্ঞা। বেশ কিছুদিন আগেও পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে পরা হতো বেল্ট। কিন্তু এখন বেল্টের রং আর জুতার রঙে মিল রেখে চলাই আধুনিক ফ্যাশন। বেল্ট যেমন চামড়ার হয়, তেমনি কাপড়ের ও সিনথেটিকেরও হয়ে থাকে। আছে রঙের বৈচিত্র্যতা ও আকারের ভিন্নতা। কারও পছন্দ একরঙা, কারও পছন্দ কয়েক রঙের মিশেল। যদিও একসময়ের চাহিদায় ছিল কালো, সাদা বা হালকা রঙের বেল্ট। কিন্তু গাঢ় রঙের প্রতি ঝুঁকছেন এখনকার অনেক তরুণ।
সুরভিত পারফিউম-
পশ্চিমা ফ্যাশনের সঙ্গে মিল রেখে উপমহাদেশীয় ফ্যাশনে সুগন্ধি পারফিউম নজর কাড়ছে তারুণ্যের। কেননা, রোদে ও গরমে ঘেমে শরীর থেকে গন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই শীত, গ্রীষ্ম বা বর্ষা যাই হোক না কেন, বছরের সব ঋতুতেই ব্যবহার করতে হবে পারফিউম। তাই ছেলেদের এক্সেসরিজে যুক্ত হয়েছে সুরভিত পারফিউম ও বডি স্প্রে। ছেলেদের মধ্যে জনপ্রিয় ওশেন ওয়েট উড, রকি মাউন্টেইন উড, সিলভার উইন্ড উড নামের ব্র্যান্ডের পারফিউম।
বাহারি ওয়ালেট-
মানিব্যাগটাও আজকাল ফ্যাশনের অংশ হয়ে উঠেছে। শুধু টাকা রাখার জন্য নয়, কার্ড ও টাকা দুটি রাখার উদ্দেশ্যে অনেক তরুণ ওয়ালেট বা মানিব্যাগ ব্যবহার করে থাকেন। অনেকে তো এটিএম কার্ড ও ভিজিটিং কার্ডও সযত্নে রাখেন ওয়ালেটে। বাজারে নান্দনিক ডিজাইনের ওয়ালেট পাওয়া যাচ্ছে। তবে কেনার আগে বয়স পেশার দিকটিও বিবেচনায় রাখতে হবে। চাকরিজীবীরা বেশি কার্ড রাখা যায় এমন আর শিক্ষার্থীরা হালকা ওয়ালেট কিনতে পারেন।
রিস্টব্র্যান্ডের ফ্যাশন-
ছেলেদের স্টাইলে ব্রেসলেট সবার পছন্দের। স্টাইলে রাফ অ্যান্ড টাফ লুক আনতে অনেকেই রিস্টব্র্যান্ড ব্যবহার করেন। তবে ব্যক্তিত্ব, রুচি, বয়স আর পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্রেসলেট বা রিস্টব্র্যান্ড বেছে নেওয়া উচিত। শার্ট, টি-শার্ট, স্যুট, ফতুয়া, যে কোনো পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায় এমন ব্রেসলেট ও রিস্টব্র্যান্ড কিনুন। ছেলেদের ফ্যাশনে বেঙ্গেল, কাফ, লেদার, ব্রিডেড, চার্ম, লিঙ্ক, রিস্টওয়াচ ও বিভিন্ন নাম লেখানো ব্রেসলেট দারুণ জনপ্রিয়। এ ছাড়া ইভেন্টস, সিলিকন ও স্পোর্টস রিস্টব্র্যান্ডগুলো বেশ জনপ্রিয়।
সূত্রঃ দৈনিক বিডি প্রতিদিন