শেভ করুন ঠিকঠাক
শেভ করা ছেলেদের প্রতিদিনের নিয়মমাফিক কাজ। এই শেভ করা নিয়ে থাকে অনেকের হেলাফেলা। এমনটা করা উচিত নয়। অনেকেই আবার নিয়মিত বাসায় শেভ করলেও নিয়ম মেনে শেভ করেন না বলে ঘটে নানা দুর্ঘটনা...
শেভের প্রতি যত্নশীল হওয়া উচিত সবারই। সেই সঙ্গে যার যার শেভের উপকরণ আলাদা থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যা অনেকেই মেনটেইন করেন না। বিশেষ করে বিভিন্ন সেলুনে একই উপকরণ দিয়ে অনেক মানুষের শেভ করে। রূপচর্চা বিষয়ক এক্সপার্টরা বলে থাকেন, ‘বাইরে শেভ করতে গেলে অবশ্যই শেভের আগে নিশ্চিত হয়ে নিন, যে সেলুনে আপনি শেভ করাতে যাচ্ছেন সেখানে নতুন ব্লেড, ভালো মানের লোশন বা ক্রিমসহ জীবাণুনাশক উপকরণ আছে কী!’ প্রায় সব পুরুষেরই শেভ করার পর ত্বক খসখসে হয়ে যায়। কারণ শেভ করার সময় নিজের অজান্তেই টুকিটাকি ভুল সবাই করে থাকেন। যার ফলে ত্বকের নমনীয় ভাব চলে যায়। জেনে নেওয়া যাক শেভ করার সময় কোন বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত।
ঘরে বা সেলুনে যেখানেই শেভ করা হোক না কেন, রেজারের ব্লেড, তোয়ালে এবং হাত যদি পরিষ্কার না থাকে তাহলে সেই থেকে নানা সমস্যার সূত্রপাত হতে পারে। তোয়ালে এবং অপরিষ্কার হাতের ব্যাক্টেরিয়া, ভালোভাবে পরিষ্কার না করেই রেজারের ব্লেড ব্যবহার ইত্যাদি কারণে ইনগ্রোন হেয়ার, ব্রণ ইত্যাদি সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই প্রতিবার শেভ করার আগে অবশ্যই গরম পানি দিয়ে রেজার ধুয়ে নেওয়া উচিত। তোয়ালে এবং হাতও পরিষ্কার রাখা জরুরি। কখনোই অন্যের রেজার বা ব্লেড ব্যবহার করা উচিত নয়। শেভ শেষে ত্বকে যেন কোনো ব্যাক্টেরিয়া প্রবেশ করতে না পারে। সে জন্য আফটার শেভ লোশন ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সমস্যা যদি বেশি হয়, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
এ ছাড়া ভোঁতা ব্লেড দিয়ে বারবার ঘষাঘষি করে শেভ করার কারণে ত্বকে চামড়া ওঠে যাওয়া বা কেটে যাওয়ার সমস্যাও দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে নতুন ও ধারালো ব্লেড দিয়ে শেভ করার সময় বেশি জোর দিলেও কাটাছেঁড়া হতে পারে। তাই এমন দুর্ঘটনা এড়াতে ধারালো ব্লেড হালকাভাবে ব্যবহার করুন। ত্বকে যেন বেশি চাপ না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখুন। আর ত্বকের একই অংশে যত কম সম্ভব রেজার চালান। মনে রাখতে হবে একই অংশে বারবার শেভ করলে ত্বক কুঁচকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ সমস্যা এড়াতে ইলেকট্রিক রেজার দিয়ে আগে দাড়ি ছোট করে নিতে পারেন। ইলেকট্রিক রেজার হাতের কাছে না থাকলে ছোট কাঁচি দিয়ে দাড়ি ছোট করে নিন।
শেভ করার সময় রেজারের ব্লেড ত্বকে চালানোর ফলে জ্বলুনি ও ত্বকে লালচে ছোপ হওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। মূলত রেজারের ব্লেড যদি ভোঁতা বা কম ধারালো হয় তাহলে এমন সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া শুষ্ক ত্বকে শেভ করা হলে বা বেশি তাড়াতাড়ি শেভ করতে গেলে এমন সমস্যা দেখা দেয়। ত্বকের জ্বলুনি এড়াতে শেভ করার আগে ত্বক ভালোভাবে ভিজিয়ে নিন। শেভিং অয়েল বা জেল বেইজ শেভিং ক্রিম ব্যবহার করুন। শেভ শেষে ত্বক শীতল করতে সাহায্য করবে এমন ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। আর রেজারের ব্লেড কিছুদিন ব্যবহারের পরই বদলে ফেলুন।
শেভ করার আগে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করার অভ্যাস নেই অনেকেরই। আবার সেলুনে তো এই চর্চা একেবারেই দেখা যায় না। তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি গোসল করার পর শেভ করা হয় তাহলে। এক্ষেত্রে গোসল করার সময় কিছুক্ষণ পানি দিয়ে মুখ ভিজিয়ে নিন। এতে দাড়ি অনেক নরম হয়ে যাবে। ফলে মসৃণভাবে শেভ করতে পারবেন সহজেই।
শেভ করার আগে একটি পরিষ্কার তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে মুখের ওপর রেখে দিন। যতক্ষণ না তোয়ালে ঠাণ্ডা হয় ততক্ষণ এভাবে ধরে রাখুন। এতে ত্বকের লোমকূপের মুখ খুলে গিয়ে দাড়ি নরম হয়ে যাবে। এরপর শেভ করলে মুখের ময়লাও দূর হয়ে ত্বক পরিষ্কার হয়। এ ছাড়া ত্বক ভালো রাখার সব ধরনের উপাদান আছে এমন শেভিং ক্রিম, ফোম বা জেল বেছে নিন। এক্ষেত্রে শেভিংয়ের অনুষঙ্গ হওয়া চাই অ্যালকোহলমুক্ত। ভেজানো ব্রাশ দিয়ে ভালোমতো ফোমটা মুখে লাগিয়ে নিন। ব্লেড বা রেজার ব্যবহারের আগে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। যতদূর সম্ভব ছোট ছোট স্ট্রোকে টানুন।
সূত্র- বিডি প্রতিদিন
ছবি-সংগৃহীত