ফ্যাশনে ঘড়ি
হাতঘড়ি এখন শুধু সময় দেখার জন্য নয়, এটি এখন ফ্যাশনের অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে। তরুণ প্রজন্মের অনেকেই চায় আকর্ষণীয় ঘড়ির কালেকশন।
প্রয়োজনের সঙ্গে ফ্যাশনের কথা মাথায় রেখে তরুণ-তরুণী সবার কাছেই হাতঘড়ির ব্যবহারে পরিবর্তন এসেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেল ঘড়িগুলোতে ডায়াল ও চেনে এসেছে ভিন্নতা। তবে তরুণদের কাছে সব সময় ব্র্যান্ডের ঘড়িগুলোই চাহিদার শীর্ষে থাকে। কারণ এগুলো দেখতে ফ্যাশনেবল, টেকেও অনেক দিন। খ্যাতনামা মডেল আদিল হোসেন নোবেল বলেন, ‘আমি চেনওয়ালা আর কিছুটা বড় ডায়ালের ঘড়ি পরতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। আর সেটি অবশ্যই নামি ব্র্যান্ডের হতে হবে। আমার পছন্দের ঘড়িগুলো হচ্ছে—রোলেক্স, টাইটান, টাইম জোন, ফসিল, মাইকেল কোর্স, কেলিভন ক্লেন, ফাস্ট ট্র্যাক, ডিজাস্টার, রাডো, টিসো, এম্পোরিও আরমানি ইত্যাদি।
ঘড়ি দিয়ে ব্যক্তিত্ব ও রুচিবোধেরও প্রকাশ পায়। ইদানীং খেলার মাঠেও আমরা বড় বড় তারকাকে দেখি হাতঘড়ি ব্যবহার করতে, যার জন্য তরুণদের কাছে স্পোর্টসের হাতঘড়ি বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে।’
ঘড়ির ডিজাইন-
স্থানভেদে ঘড়ির ডিজাইনেও আছে ভিন্নতা। কারণ সব রকমের ঘড়ি সব স্থানে পরে যাওয়া যায় না। আমাদের দেশের আবহাওয়ায় গ্রীষ্ম দীর্ঘস্থায়ী বলে বেশি ঘাম হয়। এ জন্য চেনের ঘড়ি বেশ চলে। তবে ডায়ালের মধ্যে এসেছে পরিবর্তন।
সাকো ওয়াচের জেনারেল ম্যানেজার লুত্ফর রহমান বলেন, বর্তমানে গোলাকার, চৌকোণ, ত্রিভুজ ও আয়তাকার ডিজাইনের ডায়াল চলছে বেশি এবং আকারের দিক থেকে মাঝারি আকারের ডায়ালের দিকে তরুণদের বেশি আকর্ষণ। ঘড়ির বেল্ট তিন ধরনের হয়ে থাকে—মোটা, মাঝারি ও চিকন।
এক্সটেসির মডেল তাঞ্জিম ইমরান বলেন, ঘড়ির মধ্যে অনেক রকমের ধরন আছে। আমি স্থানভেদে ঘড়ি পরে থাকি।
সাধারণত পাঁচ ধরনের হাতঘড়ি পাওয়া যায়, যা সময় ও স্থানভেদে পরা হয়। যার প্রতিটির মধ্যে আছে আলাদা বিশেষত্ব। প্রায় সব ধরনের ঘড়ি ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্য তৈরি করা হয়ে থাকে।
ড্রেস ওয়াচ-
ড্রেস ওয়াচ ঘড়ি সাধারণত একটু ফরমাল ধরনের হয়ে থাকে। অফিসের মিটিং ও বিয়ের অনুষ্ঠানে এই ঘড়িগুলো বেশি ব্যবহার হয়। তবে এর মধ্যেও আছে বিভিন্ন রকম বাহারি ডিজাইন। চেন ও লেদার—দুই ধরনেরই পাওয়া যায়। এগুলোকে অনেক সময় ক্রনোগ্রাফ ঘড়িও বলা হয়ে থাকে। এটির বিশেষত্ব হচ্ছে—ঘড়ির মধ্যে ছয়টি কাঁটা থাকে, যা দিন, তারিখ, সময় ও স্টপ ওয়াচের কাজ করে থাকে।
ফিল্ড ওয়াচ-
ভ্রমণপিপাসু এবং যাঁরা কাজের জন্য দেশ-বিদেশে ভ্রমণ করে থাকেন, তাঁদের জন্য ফিল্ড ওয়াচ ঘড়ি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘড়িগুলোর ওপর সূর্যের আলো পড়লেও সময় দেখতে খুব বেশি সমস্যা হয় না। রাতে সময় দেখার জন্য ঘড়ির মধ্যেই রয়েছে লাইট। তবে ভ্রমণে অথবা অ্যাডভেঞ্চারে যাঁরা যেতে চান, তাঁদের জন্য সবচেয়ে সুবিধা হচ্ছে—এই ঘড়ির মধ্যে আছে কম্পাস, যা পথ দেখাতে সহায়তা করবে। এ ছাড়া রয়েছে ক্যামেরা ও মিউজিক, যা ভ্রমণে বাড়তি আনন্দ জোগাবে।
এভিকটোর ওয়াচ-
সাধারণত যাঁরা বৈমানিক অথবা বিমানে চলাচল করেন, তাঁদের সুবিধার কথা চিন্তা করে এই হাতঘড়ি তৈরি করা হয়েছে এবং এই ঘড়িগুলোতে প্রযুক্তির ছোঁয়া বেশি। ব্যবহারকারীর অবস্থান শনাক্ত করার জন্য রয়েছে জিপিএস। এটি মোবাইলের সঙ্গে সংযোগ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নোটিফিকেশন দেখা যায়।
ডাইভ ওয়াচ-
ওয়াটারপ্রুফ হিসেবে তৈরি করা হয়ে থাকে ডাইভ ওয়াচগুলো। যার জন্য বর্ষাকালে এসব ঘড়ি ব্যবহার করলে খুব বেশি সমস্যায় পড়তে হয় না। তবে শুধু বর্ষাকাল নয়, এই ঘড়িগুলোর বিশেষত্ব হচ্ছে সাঁতার কাটার সময় অথবা পানির কাজের সময়ও এটি পরা যায়।
রেসিং ও স্পোর্টস ওয়াচ-
বর্তমান বাজারে ঘড়ির মধ্যে চাহিদার শীর্ষে আছে স্পোর্টস ওয়াচ। স্পোর্টসম্যানরা এ ঘড়িগুলো ব্যবহার করে থাকেন। আর সে জন্য বাইকার, সাইকেল ও অন্য খেলাধুলার জন্য রয়েছে আলাদা ডিজাইনের হাতঘড়ি। এগুলো সাধারণত বেশ রঙিন হয়ে থাকে।
সূত্রঃ দৈনিক কালের কন্ঠ
ছবিঃ সংগৃহীত