ধরে রাখুন আপনার স্মার্টনেস

ধরে রাখুন আপনার স্মার্টনেস

ছেলেরা সাজগোজের দিক থেকে খানিকটা উদাসীনই বলা চলে। তবে এখন সেটা পরিবর্তন হচ্ছে। আজকাল ছেলেদের মধ্যেও দারুণ ফ্যাশন-সচেতনতা দেখা যাচ্ছে। কারণ এ সচেতনতার সঙ্গে স্মার্টনেসের বিষয়টি জড়িত। যদিও কেবলই পোশাক-আশাক স্মার্টনেসের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত কোনো বিষয় নয়, এরপরও মানানসই পোশাক-আশাক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ছাড়া স্মার্ট হওয়ার উপায় নেই।

 

অনেকের মধ্যেই একটা ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে স্মার্ট হতে হলে দামি পোশাক পরতে হবে। বিষয়টি একদমই ভুল। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সাদামাটা মানানসই পোশাকও একজন মানুষকে দুর্দান্ত স্মার্ট করে তুলতে পারে। মেয়েদের বেলায় সাজগোজের বিষয়টি বেশি থাকলেও ছেলেদের ক্ষেত্রে কেবল পরিপাটি থাকা এবং একটু রুচিশীলতাই যথেষ্ট।

 

কথায় বলে আগে দর্শনধারী পরে গুণবিচারী। তাই পোশাক নির্বাচনে সতর্কতা অপরিহার্য। পুরুষের স্মার্টনেসের জন্য সবার আগে দরকার পোশাক জ্ঞান। আপনার পোশাকটি খুব দামি ব্র্যান্ডের হতে হবে এমন নয়। ব্র্যান্ডকে মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিন। আপনি কোথায় কী কাজে যাচ্ছেন তার ওপর নির্ভর করে পোশাক নির্বাচন করুন। যেমন ধরুন আপনি যদি কারও গায়ে হলুদে যান তাহলে পাজামা-পাঞ্জাবিতে দারুণ মানিয়ে নিতে পারবেন। আবার কারও রিসিপশনে গেলে ক্যাজুয়াল ফরমাল লুকটা নিয়ে আসতে হবে। পোশাকের রং নির্বাচনটাও জরুরি। আজকাল বিচিত্র সব রঙের পোশাক পাওয়া যায়। কাজেই পোশাকের রংটা আপনার সঙ্গে ঠিক যাচ্ছে কিনা সেটা ভেবে নিতে হবে। আরেকটা জিনিস সবার আগে মাথায় রাখতে হবে শার্ট/টি-শার্ট প্যান্ট যেটিই ব্যবহার করুন না কেন সেটি যেন একেবারে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়। আপনি যত দামি পোশাকই ব্যবহার করুন না কেন, সেটি যদি পরিষ্কার না হয় তাহলে কিন্তু সব আয়োজন মাটি হয়ে যেতে পারে।

 

আরেকটা বিষয় মনে রাখতে হবে মেয়েদের পোশাকের অনেক অংশ থাকে যেখানে ছেলেদের কম। তাই ছেলেদের সেই কম অংশের ওপরেই নজর দিতে হয়। স্যান্ডেল/জুতা ছেলেদের স্মার্টনেসের দ্বিতীয় উপকরণ। তাই জুতা নির্বাচনে সচেতন হওয়া জরুরি। সেইসঙ্গে আরও কিছু অনুষঙ্গ যেমন ঘড়ি, বেল্ট, পারফিউম ইত্যাদি ব্যবহারে সচেতন থাকা উচিত। মেয়েদের মতো ছেলেদের ফেস নিয়ে টেনশন না থাকলেও চুলের ব্যাপারটিতে খানিকটা সতর্ক থাকা উচিত। অনেকেই চুল এলোমেলো রাখাটা স্মার্টনেস মনে করেন। তবে এলোমেলো চুল আপনার চেহারার সঙ্গে কতটুকু মানায় সে ব্যাপারে নিশ্চিত হোন। চুল বেশি বড় হয়ে গেলে, চেহারায় শার্পনেস অনেক ক্ষেত্রেই কমে যায়।

 

 

মেনিকিওর পেডিকিওর কি শুধুই নারীর জন্য? অবশ্যই না। পরিষ্কার থাকা সবার জন্যই জরুরি। নতুন কারও সঙ্গে পরিচিত হলে প্রথমে আমরা হাত মেলাই। হাতের নখ যদি নোংরা থাকে তবে অস্বস্তি হতেই পারে। নিয়মিত নখ ফাইল করুন। আর পরিষ্কার রাখুন।

বিষয়গুলো একটু খেয়াল রাখলে, যে কোনো ছেলেই স্মার্ট আকর্ষণীয় হয়ে উঠবেন।

 

ফ্রাইডের আয়োজনে স্মার্ট পুরুষের মডেল হয়েছেন তাহসান খান। আর এই আয়োজনে ব্যবহূত পোশাক ও এক্সেসরিজ গ্রামীণ ইউনিক্লোর। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হকও জানালেন, ‘ব্র্যান্ড শপ হলেও আমাদের পোশাকগুলোর দাম ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই। কাজেই ব্র্যান্ডের পোশাক মানেই দামি পোশাক তা কিন্তু নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘গ্রামীণ ইউনিক্লো বাংলাদেশে ৩টি বড় উদ্দেশ্যে কাজ করছে মানবসম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে আদর্শ প্রতিষ্ঠান গড়া, দেশীয় পোশাক শিল্পের প্রযুক্তি, উৎকর্ষতা এবং দরিদ্রতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভুক্তভোগী মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষের ভালোবাসার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়া।’ উল্লেখ্য, বর্তমানে গ্রামীণ ইউনিক্লোয়ের ১৫টি আউটলেট চালু রয়েছে। স্মার্টনেস প্রসঙ্গে নাজমুল হক বলেন, ‘মানানসই রুচিশীল যে কোনো পোশাকধারী ভদ্র মানুষই আমার কাছে স্মার্ট।’

 

  • স্মার্টনেস না থাকলে মানুষের অপছন্দের তালিকায় জায়গা হতে পারে। অপরিচ্ছন্ন পোশাক, চলাফেরায় এলোমেলো ভাব, কথাবার্তা অগোছালো ইত্যাদির কারণে আপনি অন্যের বিরক্তির কারণ হতে পারেন। তাই সবক্ষেত্রেই স্মার্টনেস ধরে রাখা জরুরি। পোশাক আশাক ও এক্সেসরিজ ছাড়াও স্মার্টনেসের আরও কিছু দিক রয়েছে যেগুলো দৈনন্দিন জীবনে অনুসরণ না করলে বিপত্তিতে পড়তে হবে।
  • কাজের ক্ষেত্রের কথাই ধরা যাক। আপনার পরিশীলিত ব্যক্তিত্ব ছাড়া অফিসে গুরুত্ব পাওয়া কঠিনই হয়। স্মার্ট পুরুষরাই এখন অন্যদের পছন্দের তালিকায়। চাকরির ক্ষেত্রে ছেলেরা ফরমাল শার্ট, ফরমাল গেটআপটা বেশ জরুরি।
  • অপ্রয়োজনে ফালতু কথা না বলাই ভালো। বেশি কথা বললে স্মার্টনেস বাড়ে না, বরং পরিস্থিতি মোতাবেক প্রয়োজনের সময় জোরালো কথা বলতে হবে। অপ্রাসঙ্গিক কথা বা মন্তব্য আপনার ব্যক্তিত্বকে খাটোই করবে।
  • স্মার্টনেস বাড়াতে গিয়ে আবার ভুলেও ভাব ধরে মুড নিয়ে চলাফেরা করবেন না, ওই আলগা ভাব আপনার স্মার্টনেস অনেক কমিয়ে দেবে।
  • সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বলার অভ্যাস করতে হবে। আপনি সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বললে যে কেউ আপনার কথা মানতে বাধ্য থাকবে। কারও কৃতিত্বকে হিংসা না করে প্রশংসা করুন। এতে অন্যদের কাছে আপনার পার্সোনালিটি অনেক ওপরে উঠে যাবে।
  • মানুষ হিসেবে যে সম্মান আপনি অন্যদের কাছ থেকে আশা করেন সে সম্মান অন্যদেরও দিয়ে চলতে হবে। আপনার সবকিছুই ঠিক আছে কিন্তু কাউকে সম্মান দিতে শিখেননি, তাহলে স্মার্টনেস ধরে রাখা কষ্টকর হবে।
  • এ ছাড়াও স্মার্টনেস ধরে রাখতে হলে কিছু খাবারও আপনাকে রুটিন মেনে খেতে হবে, যেগুলো আপনার স্মার্টনেস বাড়াতে সাহায্য করবে। অনেক খাবার আছে যা মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং স্মৃতিশক্তি ভালো করে।

 

 

 

সূত্রঃ দৈনিক বিডি প্রতিদিন