এই গরমে পুরুষের জন্য হাফস্লিভ শার্ট

এই গরমে পুরুষের জন্য হাফস্লিভ শার্ট

রোদ-বৃষ্টির এ সময়টা অস্বস্তিকর হয়ে উঠে গরমে। অস্বস্তিকর গরমে স্বস্তি এনে দেবে খাটো হাতার শার্ট। কারণ খাটো হাতার শার্টে সহজেই শরীরে বাতাস চলাচল করে। খাটো হাতার শার্ট হালফ্যাশনে চলতি ধারার পোশাকও। কারণ আরাম বাদ দিয়ে যেমন ফ্যাশন নয়, তেমনি ফ্যাশনেও চাই আরাম। এ দুটি বিষয়ের সমন্বয় করেই এগিয়ে যাচ্ছে আধুনিক ফ্যাশন। আর সেসব কথা ভেবেই দোকানগুলোয় ঝুলছে এখন হাফহাতার শার্ট। তারুণ্যের চাহিদার কথা মাথায় রেখে তাতে যোগ হয়েছে নতুন নতুন নকশা।

 

আন্তর্জাতিক ফ্যাশনে ছেলেদের হাফহাতার শার্টে এখন বেশি চলছে পশুপাখি, ফুল আর গাছপালার নকশা। এ ধারা দেখা যাচ্ছে দেশি ফ্যাশন হাউসের পোশাকেও। পাখি, হাতি, ঘোড়া, ব্যাঙ, ডাইনোসর থেকে গহিন জঙ্গল, কী নেই সেখানে ! শার্টের জমিনেও যোগ হচ্ছে নানারকম নকশা। ট্রিম বা স্লিম ফিটের সঙ্গে থাকছে প্রিন্টের ফেব্রিক্স। যেখানে নদীর ছোট ছোট মাছ থেকে নানা ধরনের সামুদ্রিক মাছ। তিমি বা ডলফিনের নকশাও আছে। বুনো ফুল কিংবা বাগিচার ফুল ছাড়াও মিলবে বিভিন্ন ধরনের জ্যামিতিক নকশা। আশির দশকের নানা ধরনের প্রিন্টও চোখে পড়ছে ছেলেদের এ সময়ের শার্টে।

 

প্রিন্টের শার্ট ফ্যাশনেবল হলেও অনেকের প্রিন্টের শার্ট পছন্দ নয়। তাদের জন্য সমান গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে চেক শার্ট। চেক নানাভাবে বসিয়ে তৈরি করা হচ্ছে নকশা। বড় চেকের পাশাপাশি স্ট্রাইপ বা ছোট চেকও বাদ যাচ্ছে না। রেগুলার শার্টে বাটিক ও টাইডাইও প্রাধান্য পাচ্ছে। শার্টের হাতার ডিজাইনে আছে ফোল্ড লকার। রঙ ও ডিজাইনের দিক থেকে দেশীয় কাপড়ের হাফশার্টগুলো বেশ সৃজনশীল। ক্যাজুয়াল ও স্লিম ফিটÑ এ দুই ধরনের প্যাটার্নে পাওয়া যাবে খাটো হাতার শার্ট।

 

হাফস্লিভ শার্ট নিয়ে কথা হয় ফ্যাশন হাউস ইজির পরিচালক ও ডিজাইনার তৌহিদ চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ধারার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশের ফ্যাশনেও এখন একরঙা শার্টের চেয়ে প্রিন্টের শার্টের চাহিদা বেশি। এই ধারা দেখা যাবে হাফহাতার শার্টেও। সুতি প্রিন্টের হাফশার্ট ছাড়াও লিনেন কটন, সাটিনের মধ্যে প্রিন্ট বিশেষ করে ফুলেল প্রিন্টের চাহিদা এখন বেশি। গরমে আরামদায়ক হওয়ায় রঙের ক্ষেত্রে আমরা প্রাধান্য দিচ্ছি লাইট কালার। শুধু নকশা নয়, হাফশার্টের বাটন লাইনেও পরিবর্তন এসেছে।’

 

একরঙা শার্ট বিভিন্ন রঙের পাওয়া যায়, এতে যে কোনো বয়সীরা তাদের পছন্দের রঙ পরতে পারেন। গরমে হালকা একরঙা শার্ট আরামদায়ক। গোলাপি, শ্যাওলা সবুজ, হালকা হলুদ, ঘিয়া, বাদামি রঙের শার্ট বেশি গরমের দিনগুলোয় বেছে নিতে পারেন। গরমে হালকা রঙ আরামদায়ক হলেও অনেকে গরমে একেবারেই হালকা রঙের চেয়ে হালকা রঙের উজ্জ্বল শেড যেমন গাঢ় আকাশি, সবুজ, কফি রঙের শার্ট পরতে পছন্দ করেন।

 

শীত হোক বা গরম, অফিসের জন্য ফরমাল শার্টই উপযোগী। তবে রোজ রোজ কেতাদুরস্ত ভারিক্কি শার্ট পরলে একঘেয়েমি লাগতেই পারে। তাই নির্দিষ্ট ড্রেসকোড না থাকলে একঘেয়েমি কাটাতে মাসে দু-একদিন হাফহাতার ক্যাজুয়াল শার্ট পরে অফিসে যেতে পারেন। বিশেষ করে এই গরমে। তবে সে ক্ষেত্রে শার্টটা হতে হবে অফিস উপযোগী রঙ-নকশার। অফিসে পরার জন্য হালকা রঙের, অল্প নকশার খাটো হাতার শার্ট উপযোগী। ক্যাজুয়াল হলেও এতে মিলবে ফরমালের ফর্মালিটি এবং নিজের প্রশান্তি।

 

তরুণদের পাশাপাশি তরুণীরাও আজকাল ক্যাজুয়াল হাফশার্ট পরছেন। তরুণীদের ক্যাজুয়াল হাফশার্টের কলারের ব্যবহারে রয়েছে ভিন্নতা। তরুণীদের স্টাইলিশ শার্টে এখন চলছে ছোট কলার। তরুণীদের কাছে প্রিন্টের বিভিন্ন রঙচড়া শার্টের চাহিদা বেশি। পাশাপাশি স্ট্রাইপ ও চেক শার্টও পরতে দেখা যায়।

 

হাফহাতার শার্টের দাম নির্ভর করে ফেব্রিক, নকশা ও ব্র্যান্ডের ওপর। সাধারণ মার্কেটগুলোয় নন-ব্র্যান্ডের হাফহাতার শার্ট পাওয়া যাবে ৩০০ থেকে ৮০০ টাকায়। দেশীয় ব্র্যান্ডের হাফশার্ট ৬০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা। এক্সপোর্ট কোয়ালিটির হাফশার্ট ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা।

 

একটু কম দামে হাফশার্ট কিনতে চাইলে যেতে পারেন আজিজ সুপার মার্কেট, বঙ্গবাজার কিংবা ধানম-ি হকার্সে। এসব মার্কেটে বেশ কম দামে নন-ব্র্যান্ডের এবং এক্সপোর্ট কোয়ালিটির হাফশার্ট পাওয়া যায়। এ ছাড়া রাপা প্লাজা, সীমান্ত স্কোয়ার, বেইলি রোড, বসুন্ধরা সিটি, টুইন টাওয়ার প্রভৃতি মার্কেটেও বিভিন্ন ধরনের হাফশার্ট রয়েছে। ব্র্যান্ডের শার্টের জন্য যেতে পারেন রঙ বাংলাদেশ, বিশ্ব রঙ, দেশীদশ, বাংলার মেলা, অঞ্জন’স, ইজি, লুবনান, ওটু, ইনফিনিটি, লা-রিভ, প্লাস পয়েন্ট প্রভৃতি ফ্যাশন হাউসের নিজস্ব শোরুমে।

 

 

সূত্রঃ দৈনিক আমাদের সময়