আঠারো-ঊনিশের সাজপোশাক
য়স যখন আঠারোতে পা দিল, টিনএজটা শেষ হলো বলে। আর আঠারো-উনিশে পা দিতেই ছেলেমেয়েদের চলাফেরা, সাজপোশাকটাও হয় অন্যদের থেকে একটু আলাদা। যেন সহজেই সবার নজর কেড়ে নেয়। আঠারো-উনিশের সাজপোশাক নিয়ে এ আয়োজন
কৈশোরের দুর্দান্ত স্বভাব পেরিয়েই শুরু হয় আঠারোতে পদার্পণ। আর এই সময় তরুণ-তরুণীদের মধ্যে আসে কিছু পরিবর্তন। এই সময়টা তারা সবকিছুতেই নিজেকে একটু আলাদাভাবে উপস্থাপন করতে চায়। শারীরিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন ঘটে মনেরও। বিশেষ করে নিজেকে সবার মাঝে কীভাবে একটু আলাদা করে উপস্থাপন করবে, সবার নজর কাড়বে অন্যভাবে এই ব্যাপারগুলো কাজ করে এই বয়সটাতে। সাজপোশাকের ব্যাপারেও ছেলেমেয়ে উভয়েরই থাকে আলাদা ভাবনা।
কেমন হবে পোশাক-
টিনএজাররা সব সময়ই প্রস্তুত থাকে হালফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে। সময়ের সঙ্গে মানানসই রঙ, দেশি-বিদেশি পোশাকের ধরন এবং সংস্কৃতির মিশ্রণেই তৈরি হয় সময়ের ট্রেন্ড।
আঠারো-উনিশ এই বয়সে ছেলেমেয়েরা একটু ওয়েস্টার্ন ধরনটা বেশি অনুসরণ করে। তবে মেয়েদের ক্ষেত্রে ফ্যাশন সচেতনতা যেন একটু বেশিই। এ বিষয়ে ‘রঙ বাংলাদেশের’ স্বত্বাধিকারী সৌমিক দাস বলেন, দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে মিল রেখে ওয়েস্টার্ন ঘরানার পোশাকগুলো রাখা হয় তাদের জন্য। লং কুর্তি, লং শার্ট, ফতুয়া, টপস এগুলোই বেশি তৈরি হয় টিনএজারদের জন্য। একটু বাইরে বের হলে বা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় চট করে কুর্তির সঙ্গে জিন্স বা লেগিংস অথবা পালাজো পরে বেরিয়ে পরতে পারে অনায়াসেই। কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় লং টপস বা কুর্তির সঙ্গে ছোট ওড়না গলায় পেঁচিয়ে চলে যেতে পারে।
কে-ক্রাফটের ফ্যাশন ডিজাইনার শাহনাজ খানের সঙ্গে এ প্রসঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, এখন টিনএজার মেয়েরা বিভিন্ন প্যাটার্নের পোশাকই পরছে। কুর্তি, ফতুয়া, টপস এগুলোই এই বয়সের মেয়েদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। এখন জামার হাতায় বিভিন্ন ডিজাইন এসেছে যেগুলো তারা বেশি পছন্দ করছে। সালোয়ার-কামিজকে খুব বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে না। বরং ওয়ান পিস, টু-পিসের সঙ্গে লেগিংস, পালাজো চলছে তার বদলে।
সাজসজ্জা-
আঠারো-উনিশ বছর বয়সের মেয়েরা পোশাকের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাজটা কেমন হবে সে ব্যাপারেও বেশ সচেতন। এ বয়সে খুব ভারী মেকআপ যেমন খুব বেশি মানানসই হয় না তাদের জন্য, তেমনি একেবারে সাদামাটা দেখতেও ভালো লাগে না কিন্তু।
এ প্রসঙ্গে রূপ বিশেষজ্ঞ শারমিন কচি বলেন, টিনএজার মেয়েদের এমনিতেই দেখতে ভালো লাগে, কারণ তাদের ত্বক ভালো থাকে, মনটা ফুরফুরে থাকে বলে চেহারাতেও চাকচিক্য ভাবটা যেন প্রাকৃতিকভাবেই তাদের মধ্যে চলে আসে। খুব বেশি মেকওভার তাদের জন্য একদমই প্রয়োজন নেই। আর এই বয়সে বেশিরভাগ মেয়েদের ত্বকই ফ্রেস থাকে। বিয়ে বা অন্য কোনো পার্টির সাজের জন্য তিনি বলেন, পোশাক হিসেবে গাউন বা লং কুর্তির বেশ চল এই বয়সের মেয়েদের জন্য। শাড়িটা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। আর সাজের জন্য যাদের স্কিন একদমই ফ্রেস অর্থাৎ কোনো ধরনের দাগমুক্ত তাদের বেশি মেকআপ করলে একদমই ভালো দেখাবে না। তাদের জন্য খুব হালকা মেকআপ খুব ভালোভাবে মানিয়ে যাবে। বাইরে বের হতে গেলে তারা প্রথমেই যেটা করবে, মুখটা খুব ভালোভাবে ধুয়ে হালকা ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। দিনে বের হলে ভালো কোনো ডে-ক্রিম লাগিয়ে নিবে। তার পর হালকা করে ফেসপাউডার লাগিয়ে নিতে হবে। তার আগে প্রাইমারও লাগাতে পারে চাইলে। চোখে চিকন করে আইলাইনার এবং কাজল লাগাতে পারে সঙ্গে গাড়ো মাশকারা ব্যবহার করতে পারে। বাদামি বা নুড কালার যে কোনো আইশ্যাডো লাগালে ভালো লাগবে। এখন বিভিন্ন রঙের আইশ্যাডো পাওয়া যায়। কালোই হতে হবে এমনটা নয়। যারা কাজল দিতে অভ্যস্ত নয় তারা শুধু আইলাইনার দিয়েও চোখটাকে সুন্দর করে সাজাতে পারে। কেউ চাইলে আইল্যাশও পরে ফেলতে পারে। খুব বেশি উজ্জ্বল ব্লাসন ব্যবহার না করে পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যাবে এ রকম হালকা রঙের একটু শেড লাগিয়ে নিতে পারে। তবে ফ্রেস ত্বকের জন্য এটা অতি আবশ্যক নয়। এ রকম হালকা মেকআপে পার্টি ছাড়াও যে কোথাও ঘুরতে বের হতে পারে তরুণীরা।
শুধু মেয়েরা নয়, ছেলেরাও কিন্তু ফ্যাশনে কম এগিয়ে নেই। ট্রেন্ডি টি-শার্ট, পোলো টি-শার্ট, ক্যাজুয়াল শার্ট, ডেনিম বা জিন্সও কিন্তু তাদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। তবে পোশাক যেটিই হোক, ছেলেমেয়ে উভয়ের জন্য যেন শালীন ও মানানসই হয় সে ব্যাপারে পরিবারকেও একটু খেয়াল রাখতে হবে। কারণ এই বয়সটাই যেন একটু অদম্য। তাই টিনএজ ছেলেমেয়ের প্রতিটি ব্যাপারে সুনজর রাখা পরিবারের অন্যতম দায়িত্ব।
সূত্রঃ দৈনিক আমাদের সময়