পাশ্চাত্যের ধরন এখনকার ফ্যাশনে

পাশ্চাত্যের ধরন এখনকার ফ্যাশনে

ফ্যাশনে এখন পাশ্চাত্য ট্রেন্ড ভীষণভাবে ইন। ষোলো থেকে ছিচল্লিশ, সব বয়সীর বসনে-ভূষণে এখন পাশ্চাত্য ট্রেন্ড। দেশীয় উপকরণে তরুণদের উপযোগী করে তোলা বিভিন্ন দেশি ফ্যাশন ঢংয়ে জয়জয়কার তারুণ্য। বয়স এখানে ফিকে, জীবনযাপনের প্রতিটি ধারায় যেন এখন বিরাজ করছে উচ্ছল তারুণ্য। 

 

দেশি পোশাকে ওয়েস্টার্ন লুক! শুনে নিশ্চই চক্ষু চড়কগাছ! এত বড় পরিবর্তন? হ্যাঁ, সেই পথেই বর্তমানের দেশীয় ফ্যাশন। তবে একটু পেছনে অর্থাৎ নব্বই দশকের দিকে তাকালেই দেখা যাবে ফ্যাশনের অতীত। গত্বাঁধা কামিজ ও ঐতিহ্যবাহী পোশাকে আবদ্ধ ছিল উপমহাদেশের প্রায় সবকটি দেশ। পাশ্চাত্য ঘরানার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল না বললেই চলে। বর্তমানে বদলেছে সবকিছু। ফ্যাশনেও লেগেছে পরিবর্তনের হাওয়া। সেই হাওয়ায় দেশীয় ফ্যাশনে যুক্ত হয়েছে পাশ্চাত্য ঘরানার ট্রেন্ডি সব পোশাক। প্যাটার্ন আর নকশায় পরিবর্তন এনে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন আজকালকার নতুন নতুন ফ্যাশন ডিজাইনাররা।

 

 

 

পাশ্চাত্যের ডিজাইনে সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে টপসের ব্যবহার। বিভিন্ন কাটিং ও প্যাটার্নে তৈরি হচ্ছে টপস। কখনো গলায়, কখনো হাতায় অথবা বটম লাইনে থাকছে প্যাটার্ন বৈচিত্র্য। কিছু কিছু টপসে শোভা পাচ্ছে স্লিভলেস প্যাটার্ন। টপস ছাড়াও কুর্তি বা লং কুর্তিও তরুণীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে সিঙ্গেল পিস আর সিঙ্গেল কুর্তি বা কামিজে। কাট আর প্যাটার্ন আলাদা। পরাতেও সুবিধা। প্যান্ট, টাইটস, সালোয়ার, জিন্স, ট্রাউজারে মানিয়ে যায়। ফলে এই ওয়ান পিস এখন জনপ্রিয় এবং ফ্যাশনেবল।

 

এমনকি কামিজ, লং কামিজের প্যাটার্নেও লেগেছে পাশ্চাত্যের ছোঁয়া। দেশি ধারাকে ভেঙে তাতে যোগ করা হচ্ছে পাশ্চাত্যের ধারা। এসব পোশাকও বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। প্রজাপতি নকশার প্যাটার্নে তৈরি হয়েছে টিউনিক। লম্বা টপস বা কামিজে থাকছে বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের ছাঁট। যেমন— সামনে বেশি ঘের, পেছনে কম আর সামনে দৈর্ঘ্য থাকছে কম, পেছনে লম্বা ঘের নেমে যাচ্ছে গোড়ালি পর্যন্ত। ফতুয়া ও কুর্তায় করা হচ্ছে জ্যামিতিক কাট। গাউন স্টাইলেও করা হচ্ছে কামিজ। ওয়েস্টার্ন গাউনকে দেশীয় ধাঁচে তৈরি করছে বিভিন্ন ফ্যাশন ব্র্যান্ড।

 

পশ্চিমা ধাঁচের পোশাকের সঙ্গে সবচেয়ে মানানসই জিন্স ও পালাজ্জো। শর্ট বা লং কুর্তি, টপস বা সাধারণ কামিজের সঙ্গেই হোক পালাজ্জো সবটার সঙ্গেই মানিয়ে যায়। এ ছাড়াও টপস বা সিঙ্গেল কামিজের সঙ্গে অনেকেই বেছে নিচ্ছেন ন্যারো শেপ জিন্স। এগুলো ছাড়াও স্কার্টও বেশ ব্যবহার হচ্ছে কয়েক বছর ধরেই। টপস, টিউনিক, ফতুয়া এমনকি কামিজের সঙ্গেও অনেকে বেছে নেন স্কার্ট।

 

বাজার ঘুরে ও ডিজাইনারদের সঙ্গে কথা বলে পোশাকের চলতি ধারা নিয়ে যে ধারণা পাওয়া গেল সেখানে তরুণদের জন্য পাশ্চাত্য পোশাকই বেশি। বিভিন্ন ধরনের টপ, কুর্তা, সিঙ্গেল কামিজের চাহিদা দেখা যাচ্ছে। লম্বা শার্টের সঙ্গে পোশাকে চেইনের ব্যবহারও পছন্দে আছে। বাজার ঘুরে দেখা যাচ্ছে, জার্সি টপ, হাই-লো টিউনিক টপ (সামনের দিকে খাটো আর পেছনে লম্বা), কাঁধখোলা টপ, ফতুয়া, স্কার্ট, শার্ট, জনপ্রিয় কোনো মুখের ছবিসহ টি-শার্ট, স্লোগানসহ টি-শার্ট, স্লিম ফিট শার্ট, গাউন, কেইপ, লম্বা-খাটো কটি ইত্যাদি পোশাক বেশি পরছেন তরুণরা। আর এসব পোশাকে হালকা ও গাঢ় দুই ধরনের রংই দেখা যাচ্ছে। পোশাকের রং নির্বাচনে আন্তর্জাতিক ধারা মেনে দেশি ফ্যাশন হাউসে তৈরি হয় পোশাক। আর দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে মিলিয়ে বছরের একেক সময়ে একেক ধরনের রং বেশি চলছে।

 

দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড যেমন— ইয়াংকে, ইয়েলো, আড়ং, সেইলর, ক্যাটস আই, এক্সট্যাসি, ওয়েসটেক ব্র্যান্ডগুলো তৈরি করছে বিভিন্ন পাশ্চাত্য ঢঙের পোশাক। ফ্যাশন সচেতন সবার বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এসব ফ্যাশন।

 

সূত্র ও ছবিঃ দৈনিক বিডি প্রতিদিন