আরামদায়ক পোশাক পরুন গরমে

আরামদায়ক পোশাক পরুন গরমে

গ্রীষ্মের খরতাপে ঘেমে নেয়ে একাকার। এই সময়ে সাধারণত বাইরে বের হওয়া মানেই অস্বস্তিকর গরমে অস্থির হওয়ার জোগাড়। গ্রীষ্মকালের রূপটাই বুঝি এমন। চারদিকে বিরাজ করবে তীব্র গরম। আর তাই ভিন্ন রকম অস্বস্তি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চলে নানা কলাকৌশল।

 

গরম থেকে বাঁচতে বিশেষ করে প্রাধান্য দেওয়া হয় পোশাককে। এই সময়ের উপযোগী করে মোলায়েম কাপড়ে হাজারো রঙের সংযোজন ঘটিয়েছে এখনকার পোশাকগুলো। এ ধরনের পোশাকে যে কোনো তরুণীর পক্ষে নিজেকে স্টাইলিশ লুকে উপস্থাপন করা সহজ হয়ে গেছে।

 

 

 

চলাফেরায় নানান রকম সাবধানতা। সাবধানতার অন্যতম একটি অংশ হিসেবে সময়োপযোগী আরামদায়ক পোশাকের দিকে নজর রয়েছে সবার। গরমে আরাম হিসেবে বিশেষ কিছু পোশাক এসেছে সময়োপযোগী কাটিং সেটিং আর ফিটিং-এ। এসব পোশাক টিন থেকে ত্রিশোর্ধ্ব সবাই সব পরিবেশে পরতে পারে সহজেই।

 

একটা সময় ছিল যখন এ দেশের মানুষ উৎসব কিংবা বড় কোনো অনুষ্ঠান ছাড়া ফ্যাশন হাউসগুলোতে ভিড় জমাত না। তবে বদলে যাওয়া প্রেক্ষাপটে বাঙালি এখন ফ্যাশনসচেতন জাতি হিসেবে স্বীকৃত। তাদের কাছে ঋতুভিত্তিক পোশাক  ফ্যাশন ট্রেন্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

এখনকার পোশাক হিসেবে মেয়েদের বেশি পছন্দ টপস, কুর্তি বা ফ্রি স্টাইলের থ্রি-পিস। পোশাকগুলো শুধু আড্ডা বা ঘোরাঘুরিতেই নয়, অফিস কিংবা ক্লাসেও দারুণ মানানসই। আজকাল ভারি কাজের ট্রেডিশনাল সালোয়ার-কামিজে অনেক টিনই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। আবার ফ্রকও এ সময় ঠিক মানায় না। তাই তো আরামদায়ক কাপড় আর ঢিলেঢালা কাটে গরমের পোশাক হিসেবে ডিজাইনাররা উপহার দিচ্ছেন টপস কুর্তি বা ফ্রি স্টাইলের থ্রি-পিস। এগুলো তৈরি আরামদায়ক কাপড়ে আর কাটিং থাকে হাজারো ডিজাইনে।  ঢিলেঢালা ফিটিং-এর এসব পোশাক পাওয়া যাচ্ছে বাজারের অধিকাংশ লেডিস ফ্যাশন কর্নারে। ফ্যাশন ওয়ার্ল্ডে এসব পোশাকের সংযোজন খুব বেশি দিন হয়নি, তবুও অল্প সময়ে তার জনপ্রিয়তা গড়িয়েছে সবার মধ্যে।

 

বর্তমানে প্রায় প্রতিটি ফ্যাশন হাউসের কালেকশনে রয়েছে নানা ডিজাইনের ভিন্ন রঙের ছোঁয়ামাখা এসব পোশাক। আরও পরিষ্কারভাবে বলতে গেলে এ ধরনের প্রতিটি পোশাক ফিউশনধর্মী। শুরুতে পশ্চিমা ধাঁচটা অনুসরণ করা হলেও এখন তা দেশীয় ডিজাইনারদের নিজস্ব পছন্দ জাহিরের অন্যতম ক্ষেত্র।

 

এখন কটন, এন্ডি কটন, সিল্ক এবং এন্ডি সিল্কের মতো কাপড় দিয়ে প্রস্তুত হচ্ছে পোশাকগুলো। ইদানীং টি-শার্টের ফেব্রিক দিয়েও তা তৈরি হচ্ছে। ফলে গরমের দিনে এ ধরনের পোশাক খুবই আরামদায়ক। যারা হাইনেক পরেন তারা গরমের এই সময় একটু কলার ছাড়া বড় গলা পরতে পারেন। আরাম পাবেন। আর হাতা অবশ্যই ছোট দিতে হবে। গরমে ফুল স্লিভ কিংবা থ্রি-কোয়ার্টারের ভিড়ে কারও কারও শর্ট স্লিভই বেশি পছন্দের। গরমের দিনে হালকা রঙের পোশাক পরলে আপনাকে যেমন দেখতে ভালো লাগবে  তেমনি আপনি স্বস্তিতে চলাফেরা ও প্রয়োজনীয় কাজটাও করতে পারবেন।  জিন্স, পালাজ্জো বা ল্যাগিংসের সঙ্গে কোয়ার্টার কিংবা শর্ট হাতা বা স্লিভলেস দারুণ মানিয়ে যায়। প্রায় প্রতিটি ফ্যাশন হাউসেই দেখা মিলবে কুর্তি টপসের। এর মধ্যে আড়ং, দেশি দশ, এক্সট্যাসি, রেক্স, মনসুন রেইন, মানজা, আর্টিস্টি, ইয়েলো, ওয়েজেসসহ আরও অনেক শো-রুমে। গরম থেকে প্রশান্তি, সহজে চলাফেরা এবং ফ্যাশন ট্রেন্ডের আধুনিকতার ছোঁয়া সব মিলিয়ে বর্তমান তরুণীদের দারুণ সব পছন্দের কালেকশন পাবেন এসব হাউসে।

 

গরমে আরামদায়ক পোশাক খুঁজতে কেউ কেউ ঢুঁ মারছেন ফ্যাশন হাউসগুলোতে। কেউ আবার  টেইলার্সের দোকান থেকে তৈরি করে নিচ্ছেন। রং হিসেবে প্রাধান্য পাচ্ছে সাদা, হালকা  গোলাপি, হালকা বেগুনি, হালকা নীল, বাদামি, আকাশি, হালকা হলুদ, ধূসরসহ হালকা রংগুলো। গরমে সাদা ও অন্যান্য হালকা রঙের  পোশাক শুধু তাপ শোষণই করে না, সেই সঙ্গে  চোখকে দেয় প্রশান্তি। তবে গরমকালে সাদা রঙের  পোশাকের জয়জয়কার সবসময়ই।

 

 

পোশাকের সঙ্গে সাজসজ্জার সামঞ্জস্য থাকা উচিত। গরমের এই সময়টাতে বেজটা ন্যাচারাল এবং লাইট হতে হবে। কারণ গরমে বেশি ভারি বেজ হলে একদমই ভালো লাগবে না। হালকা বেজের সঙ্গে চোখটা করতে পারেন ব্রাউনিশ টোনের। লিপসে ব্যবহার করতে পারেন বিভিন্ন কালারের লিপস্টিক। ড্রেসের ভ্যারিয়েশন থাকলে লিপসের কালারেও ভ্যারিয়েশন আনতে পারেন।

 

তবে রাতের পার্টিতে গেলে রেড, পিংক কিংবা ন্যাচারাল কালারের লিপস্টিক ব্যবহার করুন।  হেয়ার স্টাইলের ক্ষেত্রে যেহেতু একেকজনের একেকটি ধরন পছন্দ সেক্ষেত্রে গরমকে মাথায়  রেখে পনিকেল বা বিভিন্ন স্টাইলে চুল বাঁধতে পারেন অথবা চাইলে চুল ছেড়ে দিয়েও বিভিন্নভাবে রাখতে পারেন।

 

মনে রাখবেন, এই গরমে সাজসজ্জাটা খুব বেশি কিছু হতে হবে তা কিন্তু নয়। বরং সাজসজ্জায় যত বেশি সম্ভব ন্যাচারালের  ছোঁয়া ধরে রাখা যায় ততই ভালো।

 

 

 

 

 

 

 

সূত্রঃ দৈনিক বিডি প্রতিদিন