ঈদ ফ্যাশন-২০১৯

ঈদ ফ্যাশন-২০১৯

ঈদ পোশাকে বৈচিত্র্য আসাটা নিত্যকার ব্যাপার। তবে স্টাইল, ডিজাইন, রঙের কন্ট্রাস্ট আর উপকরণের যত ভিন্নতা আসুক না কেন ধরন কিন্তু ঘুরেফিরে আবার এক। 

 

ঘুরেফিরে পোশাক ডিজাইনে আসে সেই আগের লুক। কিন্তু বৈচিত্র্য কিছু থাকাটাই সময়ের ধর্ম। দৈর্ঘ্য-প্রস্থেও থাকে তার ছোঁয়া। কখনো গোড়ালি ছুঁই ছুঁই, কখনো হাঁটুর ওপরে আবার কখনো হাঁটুর নিচে কামিজ পরাটা ট্রেন্ড। এই ধরুন লং কামিজ। পোশাকে পাশ্চাত্য বা প্রাচ্য যার আবির্ভাবই থাকুক, লং কামিজের প্রতি ঝোঁকটা কিন্তু মেয়েদের রয়েই গেছে। বার বার ঘুরেফিরে বিভিন্ন কাটিংয়ের এসব সালোয়ার- কামিজে স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছেন এ সময়ের ফ্যাশনসচেতন তরুণীরা। কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়া বলুন আর বেড়াতে যাওয়া বলুন ভিন্ন ডিজাইনের পোশাক হিসেবে প্রথমেই গুরুত্ব পাচ্ছে।

 

 

কয়েকটি ধারার সম্মিলনে তৈরি করা এসব সালোয়ার-কামিজ দেখে মনে হতে পারে ঘুরেফিরে একই জিনিস। তবে পার্থক্য শুধু পরিচ্ছন্ন পরিবেশন আর ফিউশনের প্রাধান্যে। মাঝে মাঝে এখানে রঙের প্রাধান্যও চোখে পড়ে। কিছু সময় খুব রগরগে রঙের প্রতি মেয়েদের ঝোঁক থাকে, কখনো মিইয়ে পড়া রঙে তারা খুব খুশি। কখনো তাতে লেস-পুঁতির ব্যবহার বাড়ে, কখনো কয়েকটি রঙের কাপড়ের সংযোজন থাকে। এসব পোশাকে আবার এমনও দেখা গেছে, সুতির প্রাধান্য বেড়ে যেতে অথবা সিনথেটিকের প্রাধান্য বাড়তে। তবে যে রূপেই হাজির হোক সালোয়ার- কামিজই এখন শীর্ষে।

 

আরামদায়ক কাপড়ে ঢিলেঢালা স্টাইলে তৈরি করা হচ্ছে বিশেষ ধরনের এই পোশাকগুলো। কর্মক্ষেত্র বা বিশ্ববিদ্যালয়ে সারাদিন অনায়াসে কাটিয়ে দিতে পারেন এসব পোশাক পরে। কোনো রকম অস্বস্তি আনে না বলেই মেয়েদের কাছে বিশেষ এই কামিজগুলোর কদর দেখা যাচ্ছে এবারের ঈদেও। কেউ অবশ্য ফিটিং কামিজও পরছেন। এই কামিজগুলোর একটি কমন বৈশিষ্ট্য থাকছে, লম্বা বা থ্রি কোয়ার্টার হাতা আর বেশির ভাগের আবার হাই নেক। অধিকাংশ পোশাকে থাকছে ফুলেল প্রিন্ট, একরঙা বা উভয়ের মিশেল। আরেকটু গর্জিয়াস করতে কিছু কামিজে ব্যবহার করা হচ্ছে কারচুপি, সিকোয়েন্স, ডলার, স্টোন ও জরির কাজ। এতে যখন ভারী পাথর, পুঁতি কিংবা বোতামের কাজ করা হয় তখন স্টাইলে যোগ হচ্ছে বাড়তি মাত্রা। কিছুদিন আগেও শার্টিন লেস, নেট ও পাইপিন লেসের ব্যবহার বেশি ছিল। সেই জায়গাটা এখন দখল করেছে আরও ভারী নকশাদার কাজ।

 

বিশেষ করে অ্যামব্রয়ডারির কাজ হচ্ছে বেশ জাঁকালো। কামিজের পুরো জমিন ফাঁকা থাকলেও শুধু বুকে, গলার কাছে অথবা ঝুলের কাছে কিছু অংশে ভারী অ্যামব্রয়ডারির কাজ থাকছে।

 

 

 

ভিন্ন স্টাইলের এসব কামিজের নজরকাড়া কাটিং আসলেই চোখে পড়ার মতো। হাঁটুর বেশ নিচ পর্যন্ত গড়াচ্ছে কামিজের দৈর্ঘ্য। লেক লাইনের কাটিংয়ে থাকছে ভি স্টাইল, ইউ স্টাইল, পেছনে লম্বা রেখে সামনে খানিকটা খাটো ঝুল, দুই কোনায় বেশি ঝুল, ওভাল আকৃতি, দুইদিকে কলি দিয়ে মাঝখানে সোজা ইত্যাদি প্যাটার্ন। কামিজের ঘেরটা কখনো একটু বেশি থাকছে। কোনো কামিজ স্ট্রেটকাটের। কাপড় হিসেবে প্রাধান্য পাচ্ছে লিলেন, ভয়েল, চায়না ভয়েল, পিওর সুতি, শিফন, সুইস ক্রেপ, জর্জেট।

 

এসব কামিজের সঙ্গে ব্যবহার করা হচ্ছে লেগিংস, জেগিংস, প্লাজো, প্যান্ট, স্ট্রেটকাটের সালোয়ার। কেউ কেউ চুড়িদার সালোয়ারও পরছেন। তবে আরামের কথা বললে ঢিলেঢালা প্লাজোর কথা আগে আসে। বাজারে নানা ঢঙের, নানা কাটিংয়ের প্লাজো পাওয়া যাচ্ছে। প্লাজোর কাপড়েও আছে ভিন্নতা। কামিজের সঙ্গে মানানসই আর আরামদায়ক কাপড়টি বেছে নিতে হবে আপনাকেই। ওড়নায়ও এসেছে ভিন্নতা। সাড়ে চার হাতের ওড়নার ধারণা থেকে বের হয়ে এসে কিছুটা ট্রেন্ডি স্টাইল যোগ হয়েছে। কোনো ওড়না আকারে কিছুটা ছোট, কোনোটা অনেক বড়, তবে চিকন। ওড়নার কাপড়ে থাকছে জর্জেট, লিলেন, সফট সিনথেটিক, ভয়েল। কামিজ যেমনই হোক রঙের মিল রেখে প্রিন্ট বা একরঙা যে কোনো ওড়না পরলেই হলো। কেউ কেউ আবার লং কামিজের সঙ্গে সুন্দর করে হিজাব পরতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। হালকা কাজের কামিজের সঙ্গে হিজাবের গর্জিয়াস সাজ ভালো লাগবে। আবার ভারী কাজের কামিজের সঙ্গে হিজাবি হালকা সাজ ভালো লাগবে।

 

কামিজের সঙ্গে ঢিলেঢালা সালোয়ার পরলে হাইহিল, সেমিহাই বা পেনসিল হিলে ভালো মানাবে। লেগিংস পরলে ফ্ল্যাট জুতায় ভালো মানাবে, স্যান্ডেলও নেওয়া যেতে পারে। আর গয়না পরতে চাইলে হাতে মোটা চুড়ি, ব্রেসলেট, ঘড়ি যে কোনোটা পরতে পারেন। কানে থাকতে পারে হালকা বা ভারী দুল। আবার না পরলেও চলে। লং কামিজের গেটআপে তরুণীদের যেন বড় মালা না পরলে চলেই না। আপনিও চাইলে বাজার থেকে বেছে নিতে পারেন পছন্দসই মালা। আর সাজের ক্ষেত্রে ভারী মেকআপ এড়িয়ে শুধু গাঢ় কাজল-লিপস্টিক দারুণ মানাতে পারে। আর মেকআপ যদি করতেই হয় তবে কোথায় আর কখন যাচ্ছেন সে বিবেচনায় ঠিক করতে হবে সাজটি কেমন হবে। হাতের ব্যাগটি নিতে হবে ট্রেন্ড অনুযায়ী।

 

 

 

 

 

 

 

 

সূত্রঃ দৈনিক বিডি প্রতিদিন