কাঠ-পুতিঁর গয়নায় ফ্যাশন
সোনা-রুপার গয়না তো আর রোজ রোজ পরা যায় না। সব ধরনের পোশাকের সঙ্গে তাই কাঠ-পুঁতির তৈরি গয়না এখন ‘ফ্যাশনে ইন’। খানিকটা বোহিমিয়ান ভাব আনতেও কাঠ-পুঁতির গয়নার তুলনা হয় না। পুঁতির গয়নার সব থেকে বড় বৈশিষ্ট্য হলো যেকোনো সময়ে যেকোনো পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায়। এসব গয়নায় রঙের আধিক্য থাকে। ফ্যাশনের পাশাপাশি যা মনকে রাঙিয়ে তোলে।
হালকা এবং রঙিন হওয়ায় শাড়ি থেকে শুরু করে টপ-জিনসের প্যান্টের সঙ্গে এখন নারীদের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে এই পুঁতির গয়না। তবে অনেকের ধারণা, কেবল ঐতিহ্যবাহী উৎসব পার্বণেই এই গয়না ব্যবহার করা যায়। কিন্তু সেই ধারণা ভুল। ব্যস্ত জীবনে সহজেই ব্যবহারের উপযোগী এই গয়না প্রতিদিনকে উৎসবে পরিণত করে। এর পাশাপাশি জাঁকজমক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে সাধারণ সাজেও এই গয়নায় নিজেকে খুব আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে নির্ভর করে ব্যবহারকারী কীভাবে নিজেকে উপস্থাপন করছেন তার ওপর।
সাধারণত প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য শাড়ি, সালোয়ার–কামিজ বা পশ্চিমা পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে গলায় এক লহরের পুঁতির মালা, কানে ছোট্ট দুল মানিয়ে যাবে। কোনো দাওয়াতে শাড়ি বা অন্যান্য পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কয়েক লহরের ভারী পুঁতির মালায় সাজ পাবে পূর্ণতা। দেশীয় সুতি, জামদানি, শিফন—এ ধরনের পোশাকের ক্ষেত্রেই এই গয়নার ব্যবহার বিশেষ প্রযোজ্য।
তরুণীদের কাছে কাঠ-পুঁতির গয়না পছন্দনীয় হওয়ার অন্যতম কারণ হলো এর আকর্ষণীয় রং। পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে প্রায় সব ধরনের রঙিন পুঁতির গয়না পাওয়া যায়। তবে এ ক্ষেত্রে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। যেমন পোশাক যদি হয় একরঙা, সে ক্ষেত্রে নানান রঙের পুঁতির গয়না পরবেন অনায়াসে। পোশাক যদি হয় অনেক বেশি রঙিন, সে ক্ষেত্রে পোশাকে যে রঙের আধিক্য কিছুটা কম সেই রঙের পুঁতির গয়নায় সাজ হয়ে উঠবে মোহনীয়। বেশি গাঢ় রঙের পোশাকের সঙ্গে আবার একরঙা হালকা পুঁতির গয়নাও পরতে পারেন।
এখনকার তরুণীদের চাহিদা অনুযায়ী পুঁতির মালা শুধু সিনথেটিক পুঁতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এর সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে কাঠ, পাথর এবং সুতার ব্যবহার। যা নতুন মাত্রা যোগ করেছে। খুবই সাধারণ মানুষের জীবনের সুখ–দুঃখের কল্পকাহিনিকে সঙ্গী করে অতি সাধারণ হাতের ছোঁয়ায় তৈরি এসব পুঁতির গয়না কিশোরী থেকে শুরু করে মাঝ বয়সী সবার জন্যই ব্যবহারের উপযোগী। শুধু তাই নয়, এর দামটাও সব শ্রেণির মানুষের জন্য নাগালের মধ্যে। কানের দুলসহ গলার মালার দাম ১০০ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যেই। দেশীয় বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস ছাড়াও নিউমার্কেট ও গাউছিয়ার বিভিন্ন দোকান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বরের বিভিন্ন দোকানে কম দামে এই গয়না পাওয়া যাবে। তবে টুকটাক হাতের কাজ জানা থাকলে উপকরণ জোগাড় করে নিজেরাও তৈরি করে নিতে পারেন ঘরে বসেই। একটু যত্নের সঙ্গে ব্যবহার করলে এই গয়না দীর্ঘদিন সংরক্ষণে রাখা যায়। ঘামে কিংবা বৃষ্টিতে ভিজে গেলে ভালোভাবে শুকিয়ে অথবা মুছে রেখে দেওয়াই ভালো, তাহলে রংটাও দীর্ঘদিন টিকে থাকে।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো
ছবিঃ সংগৃহীত