তেলে চুল তাজা
বিয়ের মৌসুম চলছে। মাঘের শীতের আবহাওয়ার সুবিধে যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে অসুবিধাও। এ সময় চুল ভালো রাখা খুবই মুশকিল। শীতের আবহাওয়ায় চুল রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়। ফলে স্টাইল নিয়ে পড়তে হয় বিপাকে। চুলের স্টাইলিং তো বটেই, এ সময় চুলের মসৃণতা ধরে রাখতে প্রয়োজন সঠিক তদারকি। প্রাকৃতিক গুণাবলিতে ভরপুর তেল এক্ষেত্রে বিকল্পহীন। তবে, এর পূর্বে জেনে রাখা প্রয়োজন শীতে চুলের প্রাত্যহিক যত্নের সাত সতেরো।
এ প্রসঙ্গে আকাঙ্ক্ষাস গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডের পরিচালক এবং রূপ বিশেষজ্ঞ জুলিয়া আজাদ বলেন, ‘অন্য সময়ের তুলনায় শীতে চুলের জন্য প্রয়োজন বাড়তি যত্ন। ঠাণ্ডার কারণে অনেকেই গরম পানির ওপর নির্ভর করে থাকেন। এক্ষেত্রে সাবধান, শীতকালে গরম পানিতে চুল ধোয়া মোটেও উচিত নয়। গরম পানিতে জল চুলের ময়েশ্চার শুষে নেয়। ফলে রুক্ষতা আরও বেড়ে যায়। শীতে হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন। কেননা, বেশি ক্ষারযুক্ত শ্যাম্পু চুলকে আরও রুক্ষ করে দেয়। অ্যান্টিফ্রিজ শ্যাম্পুও ব্যবহার করতে পারেন। এতে চুলে জট পড়বে না। সপ্তাহে যতবার শ্যাম্পু করবেন ততবারই কন্ডিশনার লাগাতে ভুলবেন না। শীতে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার না করে স্বাভাবিকভাবে চুল শুকান। এ সময় চুলের মসৃণতা ধরে রাখতে সপ্তাহে অন্তত দুই দিন তেল গরম করে মাথায় লাগাবেন। এতে চুলের আর্দ্রতা ঠিক থাকবে। তবে, শুধু নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলই নয়, ঝলমলে চুল পেতে নানান প্রাকৃতিক আয়ুর্বেদিক তেল ব্যবহারে সহজেই মিলবে দৃঢ়, দীর্ঘ ও প্রাণবন্ত চুল।’
এসেনশিয়াল অয়েল-
প্রকৃতির রত্ন এসেনসিয়াল অয়েল। এটি চমত্কারভাবে চুলের পরিচর্চায় কাজ করে। নানা উদ্ভিদের নির্যাস ও অনেক ঔষধি গুণাগুণ দিয়ে এই তেল তৈরি করা হয় যা চুলের বৃদ্ধিতে সেরা। এ ছাড়াও এই তেল মাথার স্ক্যাল্পে রক্তসঞ্চালন বাড়ায় এবং চুলের গ্রন্থিকোষ প্রাণবন্ত করে তোলে। এই তেল বেশ ঘন বলে অন্য যে কোনো তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করুন।
জোজোবা অয়েল-
জোজোবা গাছ থেকে এই তেলের নির্যাস। এই তেলে নেই কোনো প্রকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। ফলে মাথার স্ক্যাল্প সহজেই এই তেল গ্রহণ করে। এই তেল গভীরভাবে চুল হাইড্রেট করে, ময়েশ্চার করে এবং চুলের গ্রন্থিকোষের ভিতর থেকে পুষ্টি জোগায়। খুশকি ও চুলের শুষ্কতা দূর করে চুলকে করে তোলে কোমল ও মসৃণ। ফলে চুল সিল্কি দেখায়। রাতে ঘুমানোর আগে এই তেল মাথার স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করে নিন। সকালে ধুয়ে ফেলুন।
ক্যাস্টর অয়েল-
ক্যাস্টর অয়েল ক্যাস্টর দানা থেকে তৈরি। চুল বৃদ্ধিতে এই তেল দারুণ কার্যকর। এর ভিটামিন ই, মিনারেল ও প্রোটিনের মতো পুষ্টিগুণ চুল ঝরা নিয়ন্ত্রণ করে মাথার ত্বকের সংক্রামণ ও খুশকির বিরুদ্ধে কাজ করে। পাশাপাশি কন্ডিশনিং, ময়েশ্চার করে তুলতে ও চুলের আগা ফাটা রোধ করে। ক্যাস্টার অয়েলও সামান্য ঘন হওয়ার কারণে অন্যান্য তেল; যেমন-অলিভ অয়েল বা নারকেল তেলের সঙ্গে মাত্র কয়েক ফোঁটা মিশিয়ে ব্যবহার করা ভালো।
অর্গান অয়েল-
বাদাম জাতীয় ছোট ছোট ফল থেকে তৈরি অর্গান অয়েল। সামান্য কয়েক ফোঁটা তেলেই বাতলে দেবে এর তেলেসমাতি। এই তেলে চুলকে রোদের তাপ থেকে সুরক্ষা করে চুলে পুষ্টি জোগায়। ফলে চুলে শুষ্কতা ও ভঙ্গুরতা কমে আসে। চুলের গোড়া এড়িয়ে এই তেল ব্যবহার করুন। চুল কোমল ও মসৃণ হয়ে উঠবে।
ল্যাভেন্ডার অয়েল-
ক্লান্তি দূর করার জন্য এই তেলের কদরই আলাদা। এই তেল মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করে নিলে রক্তসঞ্চালন বাড়ায়। চুল ঝরা কমিয়ে চুল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। খুশকিও দূর করে। রাতে ঘুমানোর আগে এই তেল মাথার ত্বকে লাগিয়ে সকালে ধুয়ে ফেলুন।
সূত্র- দৈনিক বিডি প্রতিদিন
ছবি-সংগৃহীত