ত্বক এবং চুলের জন্য আমন্ডের ১০টি অসাধারন প্যাক
আমাদের রান্নাঘরের সহজলভ্য উপাদানগুলোর মধ্যে আমন্ড বাদাম অন্যতম। অথচ এই আমন্ডের বিউটি বেনিফিটগুলো সর্ম্পকে আমাদের জানা নেই। ত্বক এবং চুলের যত্নে আমন্ড ব্যবহারের উপকারিতা বলে শেষ করার নয়।
তাহলে হাতের কাছে থাকা সৌন্দর্য বাড়ানোর এই আমন্ড কে কেন আপনার সৌন্দর্য বাড়াতে ব্যবহার করবেন না। চলুন জেনে নেই ত্বক এবং চুলের যত্নে আমন্ডের কিছু প্যাক সর্ম্পকেঃ
১. সব ধরনের ত্বকের জন্য ফেসপ্যাক-
সারা রাত কয়েকটি আমন্ড পানিতে ভিজিয়ে রাখুন, সকালে মিহি করে বেটে নিয়ে কাচাঁ দুধের সাথে মিশিয়ে নিন। সারা মুখে এবং গলায় লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখুন ত্বক কতটা নরম হয়েছে এবং ঝলমল করছে।
২. অ্যাজিং ত্বকের জন্য ফেসপ্যাক-
সারারাত কয়েকটি আমন্ড পানিতে ভিজিয়ে রাখুন, মিহি করে বেটে নিয়ে টক দই এবং অলিভ অয়েল এর সাথে মিশিয়ে নিন। এই প্যাকটি মুখে এবং গলায় লাগিয়ে নিয়ে অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি নিয়মিত ব্যবহারে আপনার মুখের বলি রেখা কমাতে সহায়তা করবে এবং ত্বককে মসৃন এবং নরম করবে।
৩. স্কিন হোয়াইটেনিং এর জন্য ফেসপ্যাক-
সারারাত কয়েকটি আমন্ড পানিতে ভিজিয়ে রাখুন, মিহি করে বেটে নিয়ে এর সাথে কাচাঁ দুধ এবং জাফরান মিশিয়ে নিন, প্যাকটি মুখে লাগান। সপ্তাহে দুবার এই প্যাকটি ব্যবহার করার চেষ্টা করুন, ধীরে ধীরে আপনি নিজেই আবিস্কার করবেন আপনার ত্বক আগের চাইতে ২-৩ শেড বেশী উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
৪. গ্লোয়িং স্কিনের জন্য ফেসপ্যাক-
সূর্যমুখী বীজের সাথে আমন্ড পাউডার মিশান, সাথে দুধের সর মিশিয়ে নিন। এই প্যাকটি আপনার ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যুগুলো সারিয়ে তুলতে সহায়তা করবে, যা আপনার ত্বকে নিয়ে আসবে অন্যরকম এক দ্যুতি।
৫. ডার্ক সার্কেল কমানোর জন্য ফেসপ্যাক-
সারারাত কয়েকটি আমন্ড পানিতে ভিজিয়ে রাখুন, মিহি করে বেটে নিয়ে এর সাথে দুধের সর এবং লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে আপনার মুখের ডার্ক সার্কেল এ লাগান। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। তারপর মুখের পানি শুকিয়ে গেলে ডার্ক সার্কেলগুলোতে আমন্ড অয়েল লাগান।
৬. খুশকি দূর করতে চুলের প্যাক-
আমন্ড এবং মেথি বীজ ভিজিয়ে রেখে বেটে নিন, এর সাথে লেবুর রস, টক দই এবং ডিম ফেটিয়ে মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করে নিন, পেষ্টটি আপনার চুলে লাগিয়ে নিন ভালোমতো। প্যাকটি শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে নিয়ে, চুল শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার লাগান। এই হেয়ারপ্যাকটি ১৫ দিন অন্তর ব্যবহার করুন, আপনার চুল খুশকিমুক্ত হবে।
৭. সফট চুল পেতে হেয়ার ম্যাসেজ-
আমন্ড তেল অল্প গরম করে সব চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত লাগিয়ে নিন। এরপর একটি শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে নিন। পারলে সারা রাত রেখে দিন, আর সমস্যা মনে হলে কয়েক ঘন্টা এভাবে রেখে চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিয়ে কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন। সপ্তাহে একবার এই ভাবে আমন্ড অয়েল ব্যবহার করে দেখুন, আপনার চুল কত সফট আর বাউন্সি হয়ে উঠে।
৮. রূক্ষ চুলের জন্য হেয়ার প্যাক-
আপনার চুলে দৈর্ঘ্য অনুপাতে প্রয়োজনীয় আমন্ড অয়েল নিন এর সাথে অল্প মধু এবং দুধ মিশিয়ে নিন, এই প্যাকটি ফ্রিজে রেখে দিন আধা ঘন্টা। এবার ফ্রিজ থেকে বের করে প্যাকটি চুলে লাগিয়ে নিন, দুধ আপনার চুলকে সফট করবে, আর মধু চুলে শাইন আর গ্লসি ভাব নিয়ে আসবে।
৯. শুস্ক চুলের জন্য হেয়ার প্যাক-
একটি ডিমের সাথে কিছুটা আমন্ড অয়েল মিশিয়ে নিন, চাইলে এর সাথে অন্য কোন তেল যেমন নারকেল তেল অথবা অলিভ অয়েলও যোগ করতে পারেন, এবার এই মিশ্রনটি চুলে লাগান। চুল কে সফট আর সিল্কি করে তুলতে ডিম বেশ কার্যকর, আর অন্যান্য তেলগুলো আপনার চুলে বাড়তি পুষ্টি যোগাবে।
১০. চুলকে শক্ত করতে হেয়ার প্যাক-
আপনার চুল পরার সমস্যা, চুল ভেঙে যাওয়ার সমস্যা থাকলে এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন উপকার পাবেন। অ্যাভাকাডো পেষ্ট এর সাথে আমন্ড অয়েল এবং একটি পাকা কলা পেষ্ট করে মিশিয়ে নিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এই প্যাকটি মাথায় লাগান, এই প্যাকটি আপনা চুলের গোড়া শক্ত করবে আর চুল ভেঙে যাওয়া রোধ করবে।
ছবি- সংগৃহীত