ফ্রিদা: এখনো ফ্যাশনে জনপ্রিয়
তিনি কখনোই স্বপ্ন আঁকতেন না। বরং নিজের বাস্তবতা তুলে ধরতেন রং-তুলিতে। শিল্পী ও ব্যক্তি দুই জায়গাতেই তিনি ছিলেন শক্তিশালী। ফ্রিদা কাহলোর পুরো জীবনই যেন নাটকের কাহিনি। আর এ কারণেই বোধ হয় তিনি অর্জন করেছিলেন ভিন্নতা। সামাজিক বাধা-নিষেধ উপেক্ষা করে উদ্যাপন করে গেছেন জীবনকে। পুরো নাম মাগদালেনা কারমেন ফ্রিদা কাহলো ই ক্যালদেরোন। বিয়ে করেছিলেন বিশ্বখ্যাত মেক্সিকান চিত্রশিল্পী দিয়েগো রিভেরাকে (১৮৮৬–১৯৫৭)। পেশায় চিত্রশিল্পী। তাঁর সময়ে সেরা তিন ফ্রেসকো শিল্পীর একজন। মেক্সিকোতে ম্যুরাল আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন দিয়েগো রিভেরা।
ফ্রিদার জন্ম ১৯০৭ সালের ৬ জুলাই, মেক্সিকোর কোয়োকান শহরে। মৃত্যু ১৯৫৪ সালের ১৩ জুলাই। জন্ম-মৃত্যু একই মাসে। এ মাসেই ফ্রিদার ১১১তম জন্মবার্ষিকী এবং ৬৪তম মৃত্যুবার্ষিকী।
ভোগ ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে ফ্রিদাফ্রিদা কাহলো ফ্যাশন আইকনে পরিণত হয়েছেন। এর কারণ হলো ফ্রিদা তাঁর সাজ–পোশাকে স্বকীয় ধারা তৈরি করেছিলেন। নারীর কোমলতা তুলে ধরতে চাননি, বরং নারী শক্তিকেই প্রকাশ করেছেন। নিজের মধ্যে থাকা পুরুষালী বৈশিষ্ট্যও তিনি লুকাতে চাননি, বরং তা দৃঢ়তার সঙ্গেই প্রকাশ করেছেন। উজ্জ্বল রঙের ফুল, বিচিত্র গয়না আর পোশাকের নকশায় তিনি তাঁর জীবনকেই যেন উদ্যাপন করেছেন। এ জন্য তিনি পরিণত হয়েছেন ফ্যাশন আইকনে।
তাঁর আঁকা ছবিও অনন্য বৈশিষ্ট্য ধারণ করে আছে। মেক্সিকোর সেই সময়ে কোনো নারীই তাঁর ব্যক্তিগত জীবন বাইরে আনতেন না। ফ্রিদা কাহলো তাঁর ছবিতে নিজের একান্ত ব্যক্তিগত জীবনকে তুলে ধরতেন। যা দেখে অনেকেই প্রথমে একটা ধাক্কা খেত। পরে অবশ্য তাঁর সময়ে সবচেয়ে আলোচিত নারী চিত্রশিল্পী হিসেবে স্বীকৃতি পান ফ্রিদা।
চুলে লাগাতেন রঙিন ফুল।
ফ্রিদার আঁকা ছবি এবং তাঁর ফ্যাশনকে বুঝতে হলে জানতে হবে তাঁর ব্যক্তিজীবন। ৪৭ বছরের বেশির ভাগ অংশই জুড়ে ছিল কষ্ট আর বেদনা। ছয় বছর বয়স থেকে। পোলিওতে আক্রান্ত হন। ১৮ বছর বয়সে বাস ও ট্রলির ভয়াবহ দুর্ঘটনায় শারীরিকভাবে অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হন। চিকিৎসক হতে চেয়েছিলেন। ভাগ্যের পরিহাস—রোগী হয়েই রইলেন পুরো জীবন।
ওই দুর্ঘটনার পর বেশ কয়েক মাস শয্যাশায়ী ছিলেন। মা মাটিলদে কালডেরোনি গনজালেজ বানালেন বিশেষ ইজেল। ফ্রিদা বিছানায় শুয়েই ছবি আঁকা শুরু করলেন। বাবা গুলিরমো কাহলো তাঁর রঙের বাক্স ও তুলি ধার দিলেন মেয়েকে। পড়াশোনা বাদ দিলেন, ফ্রিদার সব মনোযোগ চলে গেল ছবি আঁকার দিকে। এরপর শুধুই এগিয়ে যাওয়ার কাহিনি।
শার্ট–প্যান্টে ফ্রিদা।
ফ্রিদা ও দিয়েগো দম্পতি—বিয়ের পরেও দুজন একাধিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন। বিচ্ছেদ হয়েছে, আবার ফিরে এসেছেন। বিয়ে করেছেন। একসঙ্গে থেকেছেন। দরজা খোলাটাই যেন বাকি ছিল। ৫০ বছরের ব্যবধান নিমিষেই হাওয়া । তারপর তো বিস্ময়ের শুরু। ফ্যাশনপ্রেমীরা মুগ্ধ হয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলেন তাঁর পোশাক, সাজের সরঞ্জাম, লেস বসানো জুতা, রোদচশমা ইত্যাদি। ডিজাইনাররা তাঁর পোশাক থেকে পেলেন অনুপ্রেরণা, নিলেন তাঁর ধ্যান–ধারনা, তাঁর নানা বৈশিষ্ট্য। বিভিন্ন ফটোশুটে, ফ্যাশন শোর র্যাম্পে তাঁর চুলের সাজ এখনো পাচ্ছে জনপ্রিয়তা।
ফ্রিদা কাহলোর আঁকা ১৪৩টি ছবির ৫৫টিতে দেখা যায় তাঁর আত্ম–প্রতিকৃতি। ১৯৫৪ সালে মারা যাওয়ার এত বছর পরও মেক্সিকান চিত্রশিল্পী ফ্রিদা কাহলো যেন নতুনভাবে তৈরি করে চলেছেন অগণিত ভক্ত। বিশেষ ভূমিকা রাখছে তাঁর পোশাক ও চুলের সাজ। মেক্সিকোর সীমানা পেরিয়ে ফ্রিদার নতুন ঠিকানা এখন ভিনদেশের আনাচকানাচের ফ্যাশনপ্রেমী ভক্তদের হৃদয়ে।
নয়নতারা সেহগাল ও রিতার সঙ্গে শাড়ি পরা ফ্রিদা (মাঝে)
প্রশ্ন উঠতেই পারে, এত বছর পর আবার কেন ফ্রিদা? ফ্রিদা মারা যাওয়ার পর তাঁর স্বামী মেক্সিকান চিত্রশিল্পী দিয়েগো রিভেরার নির্দেশেই ফ্রিদার সবকিছু তালাবদ্ধ করে রাখা হয় বাড়ির বাথরুমের এক কোনায়। শর্ত ছিল দিয়েগো মারা যাওয়ার ১৫ বছর পর তালা খোলা যাবে। ২০০২ সালে সালমা হায়েক অভিনয় করেন ফ্রিদার জীবন নিয়ে তৈরি চলচ্চিত্র ফ্রিদায়। এই ছবিও একটা কারণ, ফ্রিদার আবার আলোচনায় ফিরে আসার। ফ্রিদায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করে সালমা হায়েক অস্কারে সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন পেয়েছিলেন। মোট ছয়টি মনোনয়ন পাওয়া ফ্রিদা ছবিটি সংগীত ও মেকআপে অস্কার জিতেছিল।
দিয়েগো রিভেরা মারা যান ১৯৫৭ সালে। তাঁর মৃত্যুর ১৫ বছর পর নয়, প্রায় ৪৭ বছর পর ২০০৪ সালে খোলা হয় সেই নীল বাড়ির দরজা। এ বাড়িটি ফ্রিদার বাবা-মায়ের। পরে অবশ্য এ বাড়িতেই ফ্রিদা ও তাঁর স্বামী থাকতেন।
ঐতিহ্যবাহী পোশাকে ফ্রিদা
২০১২ সালে মেক্সিকোর সেই নীল বাড়িকে জাদুঘর বানিয়ে ফ্রিদার আঁকা ছবি, পোশাক, গয়না, অনুষঙ্গ, ব্যবহার্য নানা নিদর্শন তুলে ধরা হয়। চলতি বছর পোশাক-আশাক, অনুষঙ্গসহ ফ্রিদার ব্যবহৃত ২০০ নিদর্শন মেক্সিকোর বাইরে দেখানো হচ্ছে। এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে লন্ডনের দ্য ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড আলবার্ট মিউজিয়াম। ‘ফ্রিদা কাহলো: মেকিং হার সেল্ফ আপ’ শিরোনামের এই প্রদর্শনী এখন চলছে। চলবে আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত।
ফ্রিদার ছিল নিজস্ব সাজের ধারা। সেগুলোকে অনুসরণ করেই নকশার আয়োজনে মডেল ইন্দ্রানীকে সাজানো হয়েছে।স্কার্ট: তাহসীনা শাহীন, গয়না: হিজিবিজি
স্টাইলিস্ট ফ্রিদা
ফ্রিদা ফ্যাশনেবল ছিলেন নাকি ছিলেন না, এটা নিয়ে একসময় বিতর্ক ছিল। এখন আর নেই। ঐতিহ্যবাহী পোশাকে বুদ্ধিদীপ্ত নকশায় শরীরের কাটাছেঁড়া ফ্রিদা লুকিয়ে রাখতেন। প্রতিদিন তৈরি হতেন এমনভাবে, দেখে মনে হতো এই বুঝি দাওয়াতে যাচ্ছেন। ফ্যাশন হাউস সাদা-কালোর ডিজাইনার তাহসীনা শাহীন জানালেন, ফ্রিদা কাহলোর তৈরি হতে সময় লাগত দুই থেকে তিন ঘণ্টা। মেক্সিকোর ঐতিহ্যে প্রভাবিত ছিলেন। জোড়া ভুরু, হালকা গোঁফের রেখা যেন তাঁর প্রতিবাদের একটি মাধ্যম ছিল। দুর্ঘটনার পর ৪০ বারের মতো অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল। পচে যাওয়া থেকে বাঁচাতে ডান হাঁটুর নিচ থেকে পা কেটে ফেলে দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। ফ্রিদার কৃত্রিম পা দেখলেও মুগ্ধ হতে হয়। কৃত্রিম পায়ে চামড়ার তৈরি লাল রঙের বুট ছিল। এই বুটের ওপর তিনি আবার লেস, ঘণ্টি লাগিয়েছিলেন, রংও করেছিলেন। পা, মেরুদণ্ড, পাঁজর, কোমর, কণ্ঠাহারের অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বাস দুর্ঘটনার পর। শারীরিক এই ক্রুটিগুলো ঢাকার জন্যই লম্বা স্কার্ট, করসেট ধাঁচের টপ আর ব্লাউজ পরতেন। পোশাক পরে পেতেন আরাম, একই সঙ্গে হতো স্টাইলও। রাফেল (ঢেউ খেলানো কুঁচি) ব্লাউজ, এমব্রয়ডারি করা স্কার্ফ ও হুইপিল ব্লাউজ বেছে নিয়েছিলেন বুঝে-শুনেই। স্কার্টে থাকত লেইসের ব্যবহার। মজার বিষয় হলো, ফ্রিদা মেক্সিকোর দক্ষিণ–পূর্বে অবস্থিত এলাকা টোউয়ানটেপেকের পোশাক পরতেন, এটি ছিল মাতৃতান্ত্রিক এলাকা। স্টাইলেও তিনি নারীবাদী সত্তাকে তুলে ধরেছিলেন। ভালোবাসতেন গয়না। হাতে তৈরি বিডসের গয়না প্রায়ই পরতেন। এ ছাড়া পরতেন চেইনে লাগানো পেনডেন্ট। গয়নায় তিনি নিজস্ব একটা ধারা তৈরি করেছিলেন।
ভিনদেশের হৃদয়ে
মানুষের মনোভাবই ফ্যাশন। কথাটার পেছনে যুক্তি আছে বলে মনে করেন ডিজাইনার তাহসীনা শাহীন। জানালেন, তখনকার দিনে মেয়েদের স্টাইলকে তুলে ধরা হতো নমনীয় আর কোমল করে। সেই ধারার বিপরীতে গিয়েই ফ্রিদা নিজেকে সাজাতেন। অনেক সময় ছেলেদের মতোই স্যুট পরতেন। প্রতিবাদের ভাষা হিসেবেই যেন ব্যবহার করতেন তার সাহসিকতা। ফ্রিদার এই সাহসী মনোভাবই এখন ফ্যাশনে প্রকাশ করছেন দেশ-বিদেশের অনেক ডিজাইনার।
ফ্রিদার ঢঙে ইন্দ্রানী চুল বেঁধেছেন
রঙিন ফিতায়জিভেনচি, ডলচে অ্যান্ড গাভানা, গ্রেস লাভ লেইস, কোকো শ্যানেল, ভ্যালেন্টিনো ইত্যাদি বিশ্বব্যাপী নামকরা প্রতিষ্ঠান ফ্রিদাকে তুলে এনেছেন পোশাকের নানা নকশা আর কাটে। ফরাসি ডিজাইনার ওহোলো মুঁহের ‘বসন্ত ২০১৮’ সংগ্রহ ফ্রিদা কাহলো দ্বারা অনুপ্রাণিত। সামাজিক কোনো বাধাই ফ্রিদাকে তাঁর নারীত্ব উদ্যাপন থেকে বিরত করতে পারেনি। নিজের ভাঙা শরীরকেই ফ্রিদা এঁকেছেন বারবার, কাউকে তোয়াক্কা না করেই। ওহোলো তাঁর পোশাকগুলো বানিয়েছেন নারীদের এই মনোভাবকে প্রাধান্য দিয়েই।
টি-শার্ট, জ্যাকেটের ওপর নিজের পছন্দ অনুযায়ী আঁকা ফ্রিদা।
একটি ছবিতে দেখা যায় শাড়ি পরা ফ্রিদাকে। ১৯৪৭ সালে ম্যাসাচুসেটস থেকে স্নাতক হন ভারতের রাজনৈতিক লেখক নয়নতারা সেহগাল। সে বছর ছোট বোন রিতাকে নিয়ে মেক্সিকো যান। সেখানে ফ্রিদা কাহলোর বাড়িতেও গিয়েছিলেন তাঁরা। এই দুই বোনের কারণেই শাড়ির দেখা পান ফ্রিদা, আর তা পরে ছবিও তোলেন।
স্কার্টে থাকত লেইসের ব্যবহার
বাংলাদেশে ফ্রিদা
বাংলাদেশেও কিন্তু ফ্রিদার ঝলক দেখা যাচ্ছে। পোশাকে, গয়নায়, বাসা সাজানোর বিভিন্ন অনুষঙ্গে। অনলাইনভিত্তিক ফ্যাশন উদ্যোগ সিক্স ইয়ার্ড স্টোরি ফ্রিদার চেহারা ফুটিয়ে তুলেছে দেশীয় নকশার গয়নায়। প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা লরা খান জানালেন, চিত্রশিল্পী হিসেবে ফ্রিদা আমার কাছে শক্তিশালী ব্যক্তি। ভালোবাসি তাঁর সাহসী মনোভাব ও ছবির ভাষা। এক বছর আগে গয়নার নকশাগুলো তাঁকে উৎসর্গ করেই করা হয়েছে। অনেকেই ব্যাগে, কুশন কভারে, ট্রাঙ্ক, চায়ের কেটলি কিংবা কাপে ফ্রিদার ছবি আঁকিয়ে নিচ্ছেন।
লেসের ব্যবহার আবার দেখা যাচ্ছে পোশাকে। পোশাকে কুঁচির ব্যবহারও এখন বেশ জনপ্রিয়। বিস্কুট ফ্যাক্টরির উদ্যোক্তা বিস্কুট জানালেন, ক্রেতারা ফ্রিদার ব্যক্তিত্ব ও স্টাইল দুটোকে পছন্দ করেন বলেই তাঁর ছবি আঁকিয়ে নিচ্ছেন। ফ্রিদার রঙিন সাজপোশাক টানে সহজেই। ফোনের খাপ, রোদচশমা, জুতার ওপর বেশি কাজ করা হয়েছে ফ্রিদাকে নিয়ে। অনেকেই ব্লাউজে, টি-শার্টে ফ্রিদার চেহারা আঁকার মাধ্যমে তাঁর চেতনাকেই যেন নিজেদের মধ্যে পোষণ করছেন। মোটা ভুরু রাখার ধারাও ঘুরে-ফিরে ঠিকই পাচ্ছে জনপ্রিয়।
‘আমি ফুল আঁকি যেন ফুল মরে না যায়।’ ফ্রিদার এই উক্তি পড়লেই চোখে ভেসে ওঠে মাথায় লাগানো থোকা থোকা ফুল। প্রকৃতি ভালোবাসতেন। চুলে ফুল লাগাতেন সবার চেয়ে ভিন্নভাবে। বেণির ওপর এভাবে ফুল পরার ধারা তিনিই তৈরি করেছেন। আড়ং ১৪২৫ বাংলা সালের পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে যে ফটোশুট করেছিল, সেটির ছবিগুলোতে দেখা গেছে ফ্রিদা স্টাইল। আর তা আনা হয়েছিল চুলে ফুল লাগিয়ে। আড়ংয়ের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক শাহীনা রাব্বি জানান, দুই-তিন বছর ধরেই মাথায় ফুল পরার ধারাটা দেখা যাচ্ছে। ওই ফুলগুলোকেই একটু গুছিয়ে কীভাবে পরা যায়, সেটা নিয়েই আমরা চিন্তা করছিলাম। নতুন প্রজন্মের জন্যও একটা আধুনিক উদাহরণ দিতে চাচ্ছিলাম। ফ্রিদা কাহলোর সঙ্গে এ জায়গাটায় আমাদের মিলে গেল। মাথায় ফুল পরার আমাদের যে সংস্কৃতি, সেটাও একটু ভিন্নভাবে তুলে ধরার জন্য এভাবে ফুল লাগিয়েছিলাম।
ট্রাঙ্ক: বিস্কুট ফ্যাক্টরি
কোনো উৎসবকে কেন্দ্র করে যাঁরা এভাবে ফুল লাগাতে চান, রূপবিশেষজ্ঞ তানজিমা শারমীন তাঁদের জন্য দিয়েছেন কিছু পরামর্শ। তিনি বললেন, ‘চেহারায় যদি বাড়তি মেদ না থাকে তবেই এভাবে চুল বাঁধতে পারেন। ফিতার বদলে চাইলে
পাতলা স্কার্ফ দিয়েও ফ্রিদা স্টাইলে চুল বাঁধা যায়।’
গয়না: িসক্স ইয়ার্ডস স্টোরি
যে মেয়েটির চাপা রং, সে এখন সেই রংকে প্রাধান্য দিয়েই সাজছে। ফ্রিদা কাহলোও কিন্তু সেভাবেই সাজতেন। হয়তো অজান্তেই ফ্রিদা কাহলোর স্টাইল ধারণ করছি আমরা। ফ্যাশন একটা আবর্তনের মধ্যে দিয়েই ফেরত আসে। ওই সময় ফ্রিদা কাহলোর যা মনে হয়েছিল, বহু বছর পার করে আমাদের এখন সেটা মনে হচ্ছে—বললেন তাহসীনা শাহীন। ফ্যাশনের সঙ্গে ছবি আঁকার সম্পর্ক অনেক নিবিড়। মনের ভেতরে যদি কিছু বলার থাকে, তাহলে সেটা ফ্যাশন ও সাজসজ্জায় প্রকাশ পেয়ে যায়। যেটা ফ্রিদার ক্ষেত্রে দেখা গেছে।
নারীদের কোমর হতে হবে সরু, ত্বক থাকবে উজ্জ্বল, লোমহীন এই চিন্তা ধারার পরিবর্তন আসবে। ফ্যাশনের মধ্য দিয়ে এলেও ফ্রিদা কাহলোর শক্তিশালী ও সাহসী সত্তা তুলে ধরা হচ্ছে। মৃত্যুর কয়েক দিন আগে ফ্রিদা বলেছিলেন, আমি আশা করছি আমার চলে যাওয়া হবে আনন্দের এবং কখনোই আর ফিরতে হবে না।
শাড়ির ক্যানভাসেও ফ্রিদা। শাড়ি: পটের বিবি
কিন্তু ভক্তদের টানেই তিনি আবার ফিরে এলেন, ফিরে আসবেন বারবার।
সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো
ছবিঃ দৈনিক প্রথম আলো ও সংগৃহীত